কারণে-অকারণে অনেকেই সারাক্ষণ রেগে থাকেন। আসলে অনেকক্ষেত্রে তারা নিজেও বুঝতে পারেন না, যে হুটহাঁট রেগে যাচ্ছেন। ক্রোধ একটি মানসিক অবস্থা এবং এর সাথে সম্পর্ক আছে শরীরের। ক্রোধ মানুষের হরমোনকে প্রভাবিত করে। আর রাগের কারণে হরমোনে যে প্রভাব পড়ে তার ফলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বা আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ক্রোধে রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। ফলে যে কারো জীবনে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এসবের পাশাপাশি ওজন বাড়ার ঝুঁকি দীর্ঘমেয়াদে আপনার ক্ষতি করবে।
দুই ধরনের ক্রোধ দেখা যায়। ক্লিনিক্যাল বা মাঝেমাঝে রেগে যাওয়া— এ ধরনের ক্রোধ স্বাভাবিক ও প্রকৃতিগত। এ ধরনের ক্রোধ অনুভূতি যে কারোরই আসে এবং চলেও যায়। আর দীর্ঘস্থায়ী ক্রোধ— যা ব্যক্তির মনে দীর্ঘক্ষণ থাকে এবং চরিত্রগত দিক থেকে মারাত্মক।
রাগ মূলত ক্ষুধা বাড়ায়। রেগে গেলে অনেকেই একসঙ্গে বেশি খেয়ে থাকেন। আবার রাগের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকেন। দুই ক্ষেত্রেই ওজন বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ভারতের ওকহার্ড হসপিটালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সোনাল আনন্দ বলেন, ‘এটি বিবর্তনের একটি অংশ। একটি শিশু যখন কাঁদে তখন বেশিরভাগ সময় সন্তানের ক্ষুধা না থাকলেও কান্না থামানোর উপায় হিসেবে মা তাকে কিছু একটা খেতে দেন। এই ঘটনাগুলো আমাদের মস্তিষ্কে এমনভাবে ঝেঁকে বসেছে যে, আমরা যখন রেগে যাই বা দুঃখিত হই তখন তা মোকাবিলার ব্যবস্থা হিসেবে খাবার গ্রহণ করি’।
তিনি বলেন, ‘ক্রোধ একটি প্রবৃত্তিজনিত ব্যপার একইভাবে খাওয়াও তাই। একই মস্তিষ্কে যখন ক্রোধ কাজ করে তখন এর সমাধান হিসেবে আমরা খাবার বেছে নেই। ফলে ওজন বাড়ে’।
ভারতের পরশ হসপিটালের ডায়েটিশিয়ান ডা. আশিমা চোপড়া বলেন, ‘হ্যাঁ, ক্রোধ ওজন বাড়াতে পারে। যখন কেউ রেগে যায় তখন শরীর থেকে কর্টিসল নামক হরমোন নির্গত হয়। এই হরমোনের ফলে আপনি হয় মারাত্মক ক্ষুধা অনুভব করবেন নতুবা একেবারেই ক্ষুধা লাগবে না’।
তিনি জানান, যখন প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগবে তখন আপনার হরমোন শুধুমাত্র উচ্চ কার্বস ও শর্করাজাতীয় খাবারেই নিঃসরণ হওয়া বন্ধ হবে। অন্যান্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেলেও আপনার ক্ষুধা নিবারণ হবে না। বস্তুত, শর্করা জাতীয় খাবার ছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আপনার মেজাজ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর শর্করা জাতীয় খাবার অধিক গ্রহণ করলে ওজন বাড়বেই।