‘আমারে ছাইড়া দেন, না হলে অবস্থা খারাপ হবে’
Dainik Business File: নভেম্বর ১৯, ২০২০
'আমি ধর্ষণ করিনি। মিলন, দুলাল, ইয়াছিন, আলামিন- এই চারজন ধর্ষণ করেছে। তাদের ধরেন। 'বৃহস্পতিবার ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার আসামি মজনুকে আদালতের এলজাসে ওঠানোর পর এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে মামলার রায় ঘোষণার জন্য কঠোর পুলিশ পাহারায় তাকে আদালতে তোলা হয়। এসময় মজনু আরও বলেন, 'ভাই আমাকে ছেড়ে দেন। আমি এতিম, অসহায়। আমারে মারলে আল্লাহ অনেক শাস্তি দিবে। আমাকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি নির্দোষ। আমারে ছেড়ে দেন। আমি বাড়ি যামু গা, আমি আর থাকব না। আমি রিকশা চালাই, ভ্যান চালাই। আমি দুর্বল মানুষ। আমারে বিনাদোষে ধরে এনেছে। আল্লাহ বিচার করব রে। আমার নাম মজনু। আমি পাগল মজনু। আমারে এক বছর বিনাদোষে আটকে রেখেছে।
ছেড়ে দেয়ার আকুতি জানিয়ে মজনু বলেন, আজকে ছেড়ে দেন। আমারে অনেক অত্যাচার করেছে। আমার পক্ষে কেউ নাই। আমারে ছাইড়া দেন। আমি ব্রিজ থেকে লাফ দেব। পুলিশকে হুমকি দিয়ে মজনু বলেন, 'আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। আমি ধর্ষণকারী না। আমারে তাড়াতাড়ি ছাইড়া দেন। না হলে অবস্থা খারাপ হবে। হাতের হ্যান্ডকাফ একবার খুলে দে। কত পুলিশ আছে দেখে নেবো। '
এদিন রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার দায়ের করা মামলায় আসামি মজনুর যাবজ্জীবন দণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোসা. কামরুন্নাহার আসামি উপস্থিততে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণা শেষে আসামি মজনুকে সাজা পরোয়ানায় দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে গত ১২ নভেম্বর মামলাটির রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ ঠিক করেন। গত ৫ নভেম্বর মজনুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটিতে ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেছেন আদালত।
গত ২৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক আসামি মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরআগে গত ১৬ মার্চ মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু সিদ্দিক সিএমএম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় চার্জশিট জমা দেন।
মামলাটি গত ৬ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন দুপুরে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে তার বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে রওনা করেন ওই শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসটি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে থামে। বাস থেকে নেমে ওই শিক্ষার্থী ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় সুযোগবুঝে তাকে জাপটে ধরে মজনু। এরপর ফুটপাতের পাশের ঝোঁপে নিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে।
ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় মজনু নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি এই মজনু বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
সম্পাদক- অভি চৌধুরী।
যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com