দাবির ভারে ন্যুব্জ ঢাকা, শঙ্কা নিরাপত্তা নিয়ে

Dainik Business File: জানুয়ারি ২৯, ২০২৫

দাবির ভারে ন্যুব্জ ঢাকা, শঙ্কা নিরাপত্তা নিয়ে বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি শুরু হওয়া আন্দোলনগুলো রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা রাস্তায় নেমে আসছেন, ফলে সাধারণ মানুষের জন্য বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনের কারণে রাজধানীতে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে, গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবিতে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরুদ্ধ করে। ফলে পুরো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয় এবং রাজধানীতে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। একই সময়ে পুরান ঢাকা ও মিরপুরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও অবরোধ তৈরি হয়। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এসব ঘটনার মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়, আহত হন অনেকেই। রাত পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে পথচারী ও সাংবাদিকরাও ছিলেন। এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন ২৬ জানুয়ারি সকালে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকরা তাদের দাবির সমর্থনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। তারা পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশ জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। আন্দোলনকারীরা আবার মঙ্গলবারও শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। এর আগে, ২৪ জানুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বেতন স্কেল সংশোধনের দাবিতে শাহবাগে পদযাত্রা শুরু করেন। কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং তাদের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করে। এরপর, ২৮ জানুয়ারি থেকে রেলওয়ে কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করলে দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা যাত্রীদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করে। এ সময় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা রাজশাহী রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালান। এই আন্দোলনগুলো বিশেষ করে ঢাকায় এক নতুন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে রাস্তায় নেমে এলেও, এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। কিছু আন্দোলন বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংসতা সৃষ্টি করেছে, ফলে অনেক পথচারী, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এসব আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিছু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সরকার আলোচনার জন্য এগিয়ে আসেনি, যখন রেলওয়ে কর্মীরা আগেই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার জানিয়েছেন, তারা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন এবং পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার না করে টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে— তারা সহিংসতা এড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। এখনও পর্যন্ত, সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। তবে, পরিস্থিতি যেন আরও খারাপ না হয় এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আশা করছেন অনেকে।

সম্পাদক- অভি চৌধুরী।

যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com