শেখ হাসিনা ১৭ বছরে দেশকে ৫০ বছর পেছনে ফেলেছে: মো. মামুন

Dainik Business File: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪

শেখ হাসিনা ১৭ বছরে দেশকে ৫০ বছর পেছনে ফেলেছে: মো. মামুন বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ঐতিহ্যবাহী গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নবাবপুর। এখানে শিল্প কল-কারাখানার মেশিনারীজ, প্লাষ্টিক, বৈদ্যুতিক মটরপাম্প, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ইত্যাদি হাজারো ধরনের অতি প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর পাইকারী ও খুচরা মার্কেট। এসব অতিপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। পণ্যসামগ্রী সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে দেশের অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হবে। ঐতিহাসিকভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় রয়েছে অনেক ব্যবসা ও বাণিজ্য সংগঠন। স্থানীয়ভাবে নবাবপুর দোকান মালিক সমিতি এই এলাকার ব্যবসায়ীদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে এলাকার ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা নিরসন ও উন্নয়ন সংঘটিত হয়ে থাকে। বর্তমানে এই সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারুণ্যদীপ্ত, সৎ ও যোগ্যতা সম্পন্ন তরুণ ব্যবসায়ী নেতা সংগঠক ও রাজনীতিবিদ মো. মামুন। সম্প্রতি দৈনিক বিজনেস ফাইল’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এলাকার ব্যবসায়ী পরিবেশ রক্ষায় তার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, বিগত দিনে সমিতির নামে যারা নেতৃত্বে ছিলেন বছরে একবার পিকনিক আর ইফতার পার্টি করা ছাড়া যেন তাদের আর কিছু করার ছিল না। অথচ নবাবপুর রোডে অনেক সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে তারা কোনো উদ্যোগও নেননি। তিনি বলেন, নেতৃত্ব আল্লাহর দান। কেউ জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না, পারবে না। এর প্রমাণ আম-জনতা দেখেছে। তিনি বলেন,বিগত ১৭ বছরে অনেক অন্যায় অত্যাচার মামলার শিকার হয়েছি। তারপরও দলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় এলাকার জনগণের সমর্থনে বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলেই দুইবার ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। প্রথমবার জোর করে নিয়ে গেছে। বর্তমানেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। রাজনীতিতে আমার কোনো লোভ নেই। আমি বংশাল থানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। নেতৃত্বের যে পর্যায়ে রয়েছি এখানেই থাকতে চাই। মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিতে চাই না। তবে এলাকার সকল সমস্যা সমাধানে আমার আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। দিনরাত আমি এলাকার উন্নয়নে, স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করার চেষ্টা করছি। ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কোনোদিন নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে চাই না, আগামীতেও চাইব না। আমার নেতা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা ও হামিদ ভাইয়ের নির্দেশে কাউন্সিলর নির্বাচন করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে মাঠে সাহস করে কেউ থাকেনি। আমি কৌশলে বিভিন্নভাবে ছিলাম। আমি দলের জন্য স্থানীয় জনগণের জন্য ব্যবসায়ীদের জন্য কতোটা আন্তরিক আপনি সাধারণ মানুষের সাথে কথা বললেই জানতে পারবেন। মানুষতো ভাই দোষে-গুণে মানুষ। তবে আশা করি শত্রুরাও আমার বিরুদ্ধে কথা বলতে দুইবার ভাববে। এলাকার মশক নিধন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। নবাবপুর, সিদ্দিকবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুইটি সড়ক। এখানে যানজট নিরসনে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। কমিউনিটি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক বাড়িয়ে তাদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন নির্দেশনা ও কৌশল নিয়ে কাজ করার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সদস্যদের চাঁদার টাকায় নবাবপুর দোকান মালিক সমিতি পরিচালিত হয়। তাদের সর্বোত্তম সেবা দেবার চেষ্টা করা আমাদের দায়িত্ব। সমিতির নিজস্ব সিকিউরিটি চালু করে নবাবপুর ব্যবসায়ীদের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে ইনশাআল্লাহ। মানুষের জন্য কাজ করা অত সহজ না। নানান সীমাবদ্ধতা ও বাধা থাকে। তবে আমি দায়িত্ব নেয়ার পর যানজট নিরসনে প্রশাসন খুব জোরেসোরে কাজ করে যাচ্ছে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় আশা করি সফলভাবে কাজ করতে পারবো। তিনি বলেন, বিগত দিনগুলোর কথা ভাবলে দমবন্ধ হয়ে আসে। মামলা গ্রেফতার আতঙ্কে ঘুমাতে পারতাম না। দীর্ঘ ১৭ বছর এক করুণ জীবন। তারপরও জনগণের ভালোবাসায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। এত বছর খেয়ে পরে বেঁচে আছি এইতো বেশি। আমাকে নানাভাবে হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়েছিল। তিনি বলেন মামলা খাইছি ক্ষমতায় আছি বা নাই এলাকাতেই ছিলাম। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। বিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন প্রশাসন ব্যবহার করে যা ইচ্ছে তা করেছে। আমি কোনোদিন এসব করিনি। এলাকার বিচার সালিশ করেছি। অন্যায় কিছু করিনি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছি। ৫ আগস্টের পর এলাকায় লুটপাট চাঁদাবাজি হতে দেইনি। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে শান্ত ও সহঅবস্থানে থাকার আহ্বান জানাই। ইনশাআল্লাহ আমার এলাকায় কেউ বলতে পারবে না কোনো সমস্যা হয়েছে। অথচ রাজনীতির কারণে আমার উপর দিয়ে কত ঝড়-তুফান গেছে। আমার জনপ্রিয়তাই ছিল তাদের চক্ষুশূল। আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছে। মানুষের কল্যাণ করার জন্য। মানুষের সাথে মিশলে বোঝা যায় তারা আমাকে কতো ভালোবাসে। শেখ হাসিনা ১৭ বছরে দেশকে ৫০ বছরের পেছনে ঠেলে দিয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা সব ধ্বংস হয়ে গেছে। যেন তেন লোক টাকা কামিয়ে বিদেশে সেকেন্ডে হোম বানিয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। বিগত সরকার একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসনসহ সকল প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। এটা একটা দেশ যেখানে অনেক মতের মানুষ এখানে বাস করে। তারা কোনোকিছুর তোয়াক্কা করেনি। সামাজিক সংগঠন ব্যবসায়ী সংগঠন সব প্রতিষ্ঠান এককভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে অত্যন্ত নোংরাভাবে। ন্যায় বিচার ছিল না। অনিয়ম দুর্নীতি ছিল নিয়ম করে। আমি মনে করি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে তারা আমাকে আবার চাইবেন। ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ভ্যাট। এটা সমস্যা সমাধানে সরকারের প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। আমরা ভ্যাট সমস্যা নিরসনে সবাই মিলে একত্রে কাজ করবো।

সম্পাদক- অভি চৌধুরী।

যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com