সাক্ষাৎকারে এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান: সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ইচ্ছেটাই প্রাধান্য পাবে

Dainik Business File: অক্টোবর ৮, ২০২৪

সাক্ষাৎকারে এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান: সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ইচ্ছেটাই প্রাধান্য পাবে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এদিকে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন। এছাড়াও গত ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জীবী সদস্যের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মতামত নেন এ সংগঠনের নেতারা। অন্যদিকে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের উদ্যোগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মিলনায়তনে জীবী সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের বক্তব্য শোনেন ও লিখিত মতামত নেন। দুটো অনুষ্ঠানেই ব্যাপক সংখ্যক জীবী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ আপডেট জানতে এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমানের মুখোমুখি হয় দৈনিক বিজনেস ফাইল প্রতিনিধি। তিনি বিজনেস ফাইলকে বলেন- প্রশ্ন: এফবিসিসিআই’র সংস্কার বিষয় কোন অবস্থায় রয়েছে? মো. হাফিজুর রহমান: সংস্কার বিষয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা (জিবি সদস্যরা) আমাদের সাথে কথা বলেছেন, কেউ কেউ লিখিত প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা সেটা যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছি। বর্তমানে (ডিটিও-ডিজি)হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব যিনি ডব্লিউটিও অনুবিভাগের প্রধান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী ওমরা হজ্বে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। তিনি ২০ অক্টোবর দেশে ফিরবেন। গত কয়েক মাসে ডিটিও পদে ছিলেন ড. মালেকুন্নেছা, ড. জিনাত রেহানা, মো. জসীম উদ্দিন। বর্তমানে চলতি দায়িত্বে ড. নাজনীন কাউসার। সচিব মো. সেলিম উদ্দিনসহ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে বর্তমানে এসোসিয়েশন ও চেম্বার থেকে শত শত আপত্তি/ আবেদন ডিটিও বরাবর জমা হচ্ছে। প্রশ্ন: অধিকাংশ আবেদনেই বলা হয়েছে বর্তমান কমিটি ভেঙে প্রশাসক নিয়োগের কথা। আপনি কি বলবেন? হাফিজুর রহমান: আসলে পরিবর্তিত অবস্থায় এ ধরনের বিষয়টি অমূলক নয়। একটি কমিটিতে পক্ষ-বিপক্ষ থাকে। কেউ কেউ হয়তো বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের চাচ্ছে না। অনেকে মিটিং-এ অনুপস্থিত। অনেকে ঠিকমতো সংগঠনকে ফ্যাংশনাল করতে পারছেন না। প্রশ্ন: প্রশাসক থাকলে সমস্যা কি হয়? হাফিজুর রহমান: প্রশাসক থাকলে ঐ সংগঠন থেকে জীবী মেম্বার হওয়ার সুযোগ থাকে না। সুতরাং তারা ভোটার হতে পারেন না। প্রশ্ন: এফবিসিসিআই সংস্কার বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন? হাফিজুর রহমান: বড় সংগঠন। একটা প্রেস্টিজিয়াস সংগঠন। দেশের ২য় বৃহত্তম পার্লামেন্ট। তাছাড়া ব্যবসায়ীরাই একটা দেশের মূল অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। তাদের সকল ভালো কাজের সাথে সরকার রয়েছে। কতটুকু কি হবে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। একটা ভালো কিছু হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। প্রশ্ন: একই ধরনের সংগঠন একই বৃত্তে আনা প্রয়োজন কী? বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? হাফিজুর রহমান: ট্রেড সংগঠন (টিও লাইসেন্স) বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজন সাপেক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লাইসেন্স দেয়। লাইসেন্স দিলে তাকে আপনি কিভাবে বাদ দেবেন? সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, ফ্যাংশন ঠিক মত না করলে কিংবা উপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনো সংগঠনকে বাদ দেয়ার সুযোগ অন্তত আমি এ মুহূর্তে দেখি না। আর এত কম সময়ে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। প্রশ্ন: এফবিসিসিআই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? হাফিজুর রহমান: চাকরি যাওয়া মানে পেটে লাথি মারা। এমন কাজটি যেন কেউ না করে। একটা প্রেক্ষাপটে এ রকম একটি কাজ হয়েছে যা অমানবিক। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর দু-কিস্তিতে প্রায় কোটি টাকা সংশ্লিষ্ঠদের মধ্যে বিতরণ করেছি। তাদের দাবি ছিল প্রায় ৪ কোটি। আমরা হয়তো ৫০% দিতে পারবো। তারা চাকরি চায় কিন্তু চাকরির পোস্ট তো ফাঁকা নেই। ফাঁকা জায়গাগুলোতে লোক ঢুকে গেছে। আমরা চাইলেও চাকরি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। প্রশ্ন: এফবিসিসিআইতে নতুন সংগঠন নিবন্ধনে ৫০ লাখ টাকা ডোনেশন দিতে হয়? এটা কিভাবে দেখছেন? হাফিজুর রহমান: আসলে এ বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে আমরা হয়তো গাইড লাইন দিতে পারবো। যাতে ব্যবসায়ীরা স্বস্তি পায়। কারণ আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়ার। পেছনে ফেরার নয়। বাংলাদেশটা আমাদের সকলের। আমরা নিশ্চয়ই এফবিসিসিআইতে একটা উল্লেখযোগ্য সংস্কার করতে সক্ষম হবো, এতে প্রয়োজন হলে সময় বৃদ্ধির বিষয়টি ভাবা হবে।

সম্পাদক- অভি চৌধুরী।

যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com