মানিকগঞ্জে অসহায় দরিদ্রের মাতৃকালীন ভাতায় স্কুল শিক্ষিকার নাম
Dainik Business File: জুলাই ৩১, ২০২৪
মানিকগঞ্জ থেকে মোঃ বজলুর রহমান গ্রামগঞ্জের অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের জন্য মাতৃকালীন ভাতার ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ সরকার। যারা দিন আনে দিন খায় এমন পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদেরকে সুখী ও স্বাবলম্বীর জন্য বাংলাদেশ সরকার মাতৃকালীন ভাতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সহায়তা বিনামূল্যে প্রদান করে থাকেন । দারিদ্রতা দূর করার লক্ষ্যে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার বাজেট করে থাকেন বাংলাদেশ সরকার। পক্ষান্তরে হত দরিদ্রের এই সুবিধাকে হরন করে তাদেরকে দারিদ্র সীমার নিচে নিক্ষেপ করে কিছু অসাধু, স্বার্থপর, লোভী ও দুষ্কৃতী ব্যক্তিরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ ঘিওর অঞ্চলের ছোট বৈন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষিকা কেয়া ভূইয়ার নামে । গতকাল ৩০ জুলাই ২০২৪ ইং তথ্য নিয়ে জানা যায়, সহকারি শিক্ষিকা কেয়া ভূইয়া, যিনি বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বানিয়াজুরি ক্লাস্টারের ছোট বৈন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক । ২০১৪ সাল থেকে এখানে সহকারি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে । সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের মিতরা গ্রামে স্বামী সুমন ভূইয়া প্রভাবশালী ও চাকরিজীবী। সহকারী শিক্ষিকা কেয়া ভূইয়া নিজের পিতার বাড়ি থেকে শিক্ষকতা করে। জানা যায়, তার পিতা লাল ভূইয়া ছোট বৈন্যা গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের একজন। যার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য সরকারি কর্মকর্তা। ছোট বৈন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেলে প্রধান শিক্ষক প্রহলাদ চন্দ্র ভৌমিক কে স্কুলে উপস্থিত না পেয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হানিফ মিয়া কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, কেয়া ভূইয়া এই স্কুলের একজন সহকারি শিক্ষক। সরকারি নীতি অনুযায়ী মাতৃকালীন ৬ মাস ছুটি ভোগ করেছেন। কেয়া ভূইয়াকে তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে মাতৃকালীন ভাতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তার সততা স্বীকার করে । তিনি জানায়, তার বিকাশ একাউন্টে ভাতার টাকাগুলোও পেয়েছে । তিনি স্থানীয় মহিলা মেম্বার আলিয়া বেগম এর মাধ্যমে আবেদন করেছেন । এ বিষয়ে বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আওয়াল খান বলেন, "এ মহিলা কে আমি চিনি না তবে, স্থানীয় আমার মেম্বার এ বিষয়ে বলতে পারবেন ।" ৭,৮,৯ ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার আলেয়া বেগম বলেন, আমি এ বিষয়ে জানিনা । চেয়ারম্যান এ পর্যন্ত মাত্র ৪টি মহিলাকে আমার সুপারিশে মাতৃকালীন ভাতা দিয়েছেন । চেয়ারম্যান কখনোই আমাদের তোয়াক্কা করেন না। ৮ নং ওয়ার্ড পুরুষ মেম্বার বলেন, এলাকা থেকে অনেকেই হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে মাতৃকালীন ভাতা থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা অনিয়মে নিয়ে থাকে। যাদের তালিকা ও নাম জানা নেই । এমন অনিয়ম সম্পর্কে ঘিওর উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে নাজনীন আরা বলেন, প্রত্যেককে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বার ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে আমার কাছে প্রেরণ করলে আমি তার অনুমোদন দিয়ে থাকি । তবে ওই মহিলা যদি এমনটাই হয়ে থাকে তাহলে সে অযোগ্য, চেয়ারম্যান থেকে এমন তথ্য পেলে আমি এর ব্যবস্থা নেব । এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো আবেদনকৃত মহিলাটি গর্ভবতী কিনা এটা যাচাই-বাছাই করা । তবে তার ব্যক্তিত্ব ও পারিবারিক অবস্থা এমন হলে, নীতি অনুসারে সে অযোগ্য বলেই গণ্য হবে। ছোট বৈন্যা এলাকার কয়েকটি দরিদ্র পরিবার থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, তারা মাতৃকালীন ভাতার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে অনেকবার গিয়েও তারা তা পাননি । তারা অভিযোগ করে বলেন, " আমরা গরিব মানুষ । সরকার আমাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা বরাদ্দ দিয়ে থাকলেও তা আমাদের ঘরে পৌঁছায় না। আমরা গরিব মানুষ কার কাছে বলব ? আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম, যারা আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়ে খায়, তাদের কপালে যেন ঠাটা পড়ে ।"সম্পাদক- অভি চৌধুরী।
যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com