সংবাদমাধ্যমের সংকটের কারণ ও সমাধানের উপায়সমূহ
Dainik Business File: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
ডিএফপি কর্তৃক বিভিন্ন মিডিয়ার মিথ্যা প্রচার সংখ্যার রিপোর্ট প্রদান, সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ডিএফপি মনিটরিং কমিটি কর্তৃক রেট কার্ড প্রদান, সরকার ঘোষিত বেতন বোর্ড রোয়েদাদ যথাযথ বাস্তবায়ন না করেও সরকারের সকল সুবিধা ভোগ করাসহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট দুর্নীতি, অনিয়ম ইত্যাদি। এখন ভাবতে হবে, এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী! প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, মানববন্ধন করে সংবাদমাধ্যমের নানাবিধ সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। তাই, সংবাদমাধ্যমের বান্ধব বলে কথিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি অবহিত করাতে হবে। এ বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে: ১. এ বিষয়ে লিফলেট আকারে সব সাংবাদিকের মধ্যে প্রচার করা, সচেতন করা ও সংগঠিত করা। ২. ফেসবুকে যেভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, সেটা অব্যাহত রাখা। ৩. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় তথ্যমন্ত্রী, দুদক, বিএফইউজে-ডিইউজে’র কাছে আবেদন পেশ ও হাইকোটে রীট করার উদ্যোগ নেওয়া। ৪. জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সংক্রান্ত ব্যান্যার টানানো ও মানববন্ধন করা। ৫. প্রয়োজনে, সমমনা ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকদের নিয়ে ‘সংবাদ মাধ্যমে সংকট দূরীকরণ আহ্বায়ক কমিটি’ গঠন করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জনৈক মালিক-সম্পাদক ৯টি দফা প্রধানমন্ত্রী বরাবর তুলে ধরেছেন। তার এই ৯ দফার মধ্যে ৮টিই মালিকদের উপার্জনের মূল খাত বিজ্ঞাপন বিষয়ক। তিনি সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বার্থের দোহায় দিয়েছেন। কিন্তু, কিভাবে সাংবাদিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে, তার কিছুই উল্লেখ করেন নি। সে বিষয়ে ওসমান খান নামক এক সাংবাদিক লিখেছেন: মালিকদের দুইনাম্বারি বন্ধ করতে হবে.......১০০ পত্রিকা ছাপিয়ে ২০ হাজার দাবি করা...কয়েকজনকে ওয়েজবোর্ড দিয়ে বাকি সবাইকে থোক বেতন দেয়া.......ব্যাংকে বেতন যাওয়ার পর সেখান থেকে আবার টাকা ফিরিয়ে নেয়া.....ওয়েজবোর্ড প্রাপ্তদের ছাটাই করে থোক বেতন দেয়া লোক নিয়োগ করা ........কত ধরনের দুইনাম্বারি চলতেছে পত্রিকাগুলোতে... । আমরা নবম বেতনবোর্ড চাই এবং সকল সাংবাদিকের জন্য সকল সংবাদমাধমে তার বাস্তবায়ন চাই। আইন করতে হবে, মালিকপক্ষ বেতনবোর্ড বাস্তবায়ন করলে সরকারি বিজ্ঞাপন পাবে--- নচেত পাবে না। একটি প্রতিষ্ঠান কত শতাংশ সাংবাদিকের জন্য বেতনবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে তার ভিত্তিতে বিজ্ঞাপনের হার নির্ধারণ করতে হবে। পত্রিকার মিথ্যা প্রচার সংখ্যার সঙ্গে সরকারি বিজ্ঞাপনের হারের কোনও সম্পর্ক থাকবে না। সাংবাদিক নেতা কুদ্দুস আফ্রাদ’এর সাম্প্রতিক একটা বিবৃতির অংশ তুলে ধরছি। নোয়াবের ১৩জুন’২০১৯ বিবৃতির পর এটি ফেসবুকে দেখা যায়। ‘শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩০০ টাকা। এত দিন এই গ্রেডে স্কেল ছিল ৪ হাজার ১৫০ টাকা। শ্রমিকদের সর্বোচ্চ বেতন স্কেল (১৬তম গ্রেড) নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২০০ টাকা। এত দিন এই স্কেল ছিল ৫ হাজার ৬০০ টাকা। তাহলে সাংবাদিকরা এর চেয়েও কি অধম?’ আমাদের প্রশ্ন--- সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর প্রসঙ্গ উঠলে শ্রমিকদের সাথে তুলনা করতে হবে কেন? এ আমাদের দার্শনিক দীনতা! এ দীনতা কাটিয়ে উঠতে হবে। সাংবাদিকদের বেতন জটিলতা সংক্রান্ত মামলা শ্রম আদালতের পরিবর্তে ফৌজদারি আদালতে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা’ প্রসঙ্গে শুরু থেকে একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হয়ে আছে। এটা একটা অদৃশ্য, নৈর্ব্যক্তিক বিষয়। চিলে কান নিয়ে যাওয়ার মত---অলীক ধাঁ ধাঁ। ‘অলীক স্বাধীনতা’ নিয়ে যত লেখালেখি আর সংগ্রাম হয়--- তার সিকিভাগ সংগ্রাম হয়না সংবাদমাধ্যম টেকসইকরণ, চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, চাকরি স্থায়ীকরণ ইত্যাদি নিয়ে। প্রকৃতপক্ষে দরকার সংবাদমাধ্যমের টেকসইকরণের আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা। এটা না থাকার কারণে সারাজীবন সাংবাদিকদের অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করতে হয়! এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার খুব জরুরীভিত্তিতে। লেখক: বাবলু রহমান, সাংবাদিক, ই-মেইলঃ bablu.rahmanbd@gmail.comসম্পাদক- অভি চৌধুরী।
যোগাযোগ: ৫১/৫১/এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (লেভেল-৩), স্যুট-৪০৫, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
ফোন:০২-২২৩৩৫৭০৭৩ মোবাইল: ০১৭১১-৫২০০৪৬, ০১৮১৯-২২৬১৬০। ই-মেইল: dainikbusinessfile@gmail.com