ঢাকা   ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
‘ধর্ষণ’ নিয়ে বক্তব্যের জন্য অবশেষে ডিএমপি কমিশনারের দুঃখ প্রকাশ এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ ভোটাররা চাইলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করতে প্রস্তুত আছি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা : ২০ আসামিরই মৃত্যুদণ্ড বহাল ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কৃষি সেক্টর ফ্যাসিস্টের দোসরমুক্ত করে উন্নয়ন অব্যাহত রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন কুমারখালী উপজেলা সমিতির ঢাকার দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ইউএন হাউস উদ্বোধন করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব রাজশাহীতে পূত্র বধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শ্বশুর গ্রেফতার হাসপাতালের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব; চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক বিপ্লব দৈনিক বিজনেস ফাইল ই-পেপার (বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫)

এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ ভোটাররা চাইলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করতে প্রস্তুত আছি

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫
  • 24 শেয়ার

দৈনিক বিজনেস ফাইল’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এফবিসিসিআই নেতা খন্দকার রুহুল আমিন

হিল্লোল কল্লোল

সমাজে কিছু মানুষ আছেন যারা নিজের ভাগ্য বিলাসিতার কথা চিন্তা না করে সাধারণ মানুষের এবং সাধারণ ব্যবসায়ীদের কথা ভাবেন। তারা বিশ্বাস করেন যে মানুষের জন্য কিছু করলে সেটার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। মহান সৃষ্টিকর্তার এই বিশাল পৃথিবীতে তারা আমৃত্যু মানুষের ভালোবাসা পেতে চান। এমনই একজন নিরহংকার মানুষ খন্দকার রুহুল আমিন। নিজের অবস্থান উঁচু হলেও আচার, আচরণ এবং মানবিক কর্মে তিনি সত্যিই একজন সাধারণ মানুষ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী একজন কৃতী সংগঠক। ঐতিহ্যবাহী খন্দকার গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি। সমাজ সচেতন এই ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব গতকাল দৈনিক বিজনেস ফাইল-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন। কাপ্তান বাজারে অবস্থিত মাথা উঁচু করে দেখতে হয় এমন অপূর্ব নির্মাণ শৈলীর নিজস্ব ভবনের ১১ তলায় নিজ কার্যালয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উঠে আসে সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গ। সেখান থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
দৈনিক বিজনেস ফাইল: ধন্যবাদ খন্দকার রুহুল আমিন সাহেব, আমাদের সাথে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য। চলুন শুরুতেই জানতে চাই, আপনার দীর্ঘ ব্যবসায়ী জীবন ও এফবিসিসিআইয়ের সাথে আপনার সম্পৃক্ততার ইতিহাস সম্পর্কে।
খন্দকার রুহুল আমিন: ধন্যবাদ আপনাদের। আমার ব্যবসায়ী জীবনের চার দশক পার হয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ে আমি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী। ব্যবসায়ী হিসেবে আমার পথচলা শুরু হয়েছিল মূলত ক্ষুদ্র উদ্যোগ থেকে। পরে বিভিন্ন খাতে সফলভাবে কাজ করতে পেরেছি।
এফবিসিসিআইতে প্রথম পরিচালক নির্বাচিত হয়েছিলাম ১৯৯৮-২০০০ মেয়াদে, যখন আবদুল আওয়াল মিন্টু সাহেব সভাপতি ছিলেন। এরপর আরও সাতবার পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটিতে কাজ করেছি, ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছি একাধিকবার। কিন্তু বারবার সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হলেও ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত হতে পারিনি, যা ব্যবসায়ী সমাজের অনেকেই মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।
আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি গঠন করেছি এবং একাধিকবার সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে আমি এর প্রধান উপদেষ্টা। ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনেও দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছি। এ সংগঠনটিও দেশের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

২০২৪ সালে সেরা ব্যবসায়ী (উদ্যোক্তা) হিসেবে দৈনিক বিজনেস ফাইল সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন ব্যবসায়ী নেতা খন্দকার রুহুল আমিন। ছবিতে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমান, ঢাকা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও দেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদ্যাপিঠ মোহাম্মদপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. এইচ এম অলিউল্লাহকে দেখা যাচ্ছে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অর্থনৈতিক সংস্কার

বিজনেস ফাইল: বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কার্যক্রম ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
খন্দকার রুহুল আমিন: আমি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানাই। একজন নোবেল বিজয়ী ব্যক্তি যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই দেশ-বিদেশের আগ্রহ থাকে। এখন পর্যন্ত এই সরকার আর্থিকখাতের বেশ কিছু সফল উদ্যোগ নিয়েছে, যেমন টাকা পাচার রোধের কার্যক্রম। তবে এনবিআরের কিছু সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে ওঠেছে। কর ও ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত হয়রানি বন্ধ হওয়া দরকার।

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি ইতিবাচক দিক, যদিও চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমি মনে করি, ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় বাড়ালে বাজার আরও স্থিতিশীল থাকবে।

এনবিআর ও ভ্যাট ব্যবস্থা

বিজনেস ফাইল: এনবিআরের বর্তমান নীতি এবং ভ্যাট ব্যবস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
খন্দকার রুহুল আমিন: বর্তমানে এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) কার্যক্রমে কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও বেশ কিছু সমস্যাও বিদ্যমান। বিশেষ করে কর ও ভ্যাট ব্যবস্থাপনা আরো দক্ষ ও ব্যবসাবান্ধব হওয়া দরকার।
এনবিআর বলছে, “কর দিয়ে কেউ দেউলিয়া হয় না,” কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি ঠিকমতো কর দিচ্ছে না, অন্যদিকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ওপর বর্ণনাতিত অতিরিক্ত চাপ দেওয়া হচ্ছে।

এনবিআরের কর্মকর্তারা ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের খাতাপত্র জব্দ করে হয়রানি করছে। এসব বন্ধ হওয়া দরকার। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এক্ষেত্রে দূরদর্শিতার অংশ হিসেবে কর ও ভ্যাটের আওতা বাড়ানো প্রয়োজন, কিন্তু মনে রাখতে হবে সেটা যেন বিদ্যমান করদাতাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি না করে।
এনবিআরকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং যারা কর ফাঁকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এখনতো যে অপরাধ করছে সে দায়ী হচ্ছে না।
আমি বারবার বোর্ডে এসব বিষয়ে আলোচনা করেছি, কিন্তু এক ধরনের অপেশাদার মনোভাব থাকায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। যদি কখনো সুযোগ পাই, তাহলে কর ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ ও ব্যবসাবান্ধব করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেব।

সিন্ডিকেট ও বাজার নিয়ন্ত্রণ

বিজনেস ফাইল: আপনি কি মনে করেন যে, সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম হবে?
খন্দকার রুহুল আমিন: সিন্ডিকেট শুধু ব্যবসায়ীদের মধ্যে থাকে না, বরং প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তির সম্পৃক্ততায় এটা হয়। যদি সরকারের সদিচ্ছা থাকে, তবে সিন্ডিকেট ভাঙা আবশ্যিকভাবে সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তিকে যখন বারবার আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়, তখন বোঝা যায় সেখানে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।
ডলার সংকট দেখিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আমদানির সুযোগ বন্ধ রাখা ঠিক নয়। বরং এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে, যেন তারা বড় প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল না হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আটটি ডরহমং যাতে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে, ব্যবসায়ীদের এ সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব। সিন্ডিকেটগুলো সাধারণত কিছু সরকারি কর্মকর্তার অতিলোভের কারণে তৈরি হয়, এবং সরকার চাইলে এদের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে। আমার মতে, সরকারের উচিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আমদানি করার সুযোগ দেওয়া এবং সিন্ডিকেট সৃষ্টি বন্ধ করা।
এক্ষেত্রে সরকার চাইলে এফবিসিসিআই সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
কিন্তু এটা সবার মনে রাখতে হবে এফবিসিসিআই এককভাবে চাইলেই সিন্ডিকেট বন্ধ করা সম্ভব নয়।

বাজারদর

বিজনেস ফাইল: বাজারদর সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?
খন্দকার রুহুল আমিন: বর্তমান সরকারের সাফল্য আসতে শুরু করেছে। এবারের রমজানে সাধারণ মানুষ সহনীয় পর্যায়ে দ্রব্যমূল্য কিনতে পারছে। এটা কিন্তু একটা স্বস্তির বিষয়। তবে চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, আবার তেলের দাম কিছুটা কমেছে।
এটার কন্টিনিউ প্রসেস সরকারকে এখনই ভাবতে হবে।
আমি মনে করি, সরকারের উচিত ভ্যাটের স্লাবের বিষয়ে এনবিআরকে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া, যাতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এনবিআরকে আরো খেয়াল রাখতে হবে যাতে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা সঠিকভাবে ট্যাক্স দেয় এবং করকর্তা ব্যক্তিরা কারো সাথে যেন অসদাচরণ না করে।

এসএমই সেক্টর

বিজনেস ফাইল: এসএমই সেক্টর নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?
খন্দকার রুহুল আমিন: এসএমই সেক্টর দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর উন্নয়ন দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমি বারবার এফবিসিসিআইতে এসএমই সেক্টরের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু সেই কাজগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। এসএমই সেক্টরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। আমি বিশ্বাস করি, এই সেক্টরকে উন্নত করতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গবেষণা সেল এবং কার্যকর সেক্রেটারিয়েটের প্রয়োজন।
এসএমই উদ্যোক্তারা যদি ঋণ নেন, তারা সাধারণত তা সময়মতো পরিশোধ করেন, তবে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ এবং শর্তগুলো আরও সমতা বজায় রেখে প্রদান করা উচিত। যদি এফবিসিসিআইয়ের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাই, আমি এসএমই সেক্টরের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং সহায়ক ব্যবস্থা তৈরি করবো। আমার লক্ষ্য থাকবে, এই সেক্টরকে চীন, জাপান এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির মত উঁচুমানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
পৃথিবীর কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো ঋণে এত উচ্চ সুদ ব্যাংক নেয় না। যেহেতু বাংলাদেশে সিঙ্গেল (Single) ডিজিটে ঋণ দেয়া শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে থেকে। হঠাৎ উচ্চ সুদের কারনে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থে যে কোনো মূল্যে সুদের হার সিঙ্গেল (Single) ডিজিটে নিয়ে আনতে হবে। এটা মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা কে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।

এফবিসিসিআই নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিজনেস ফাইল: আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে আপনার পরিকল্পনা কী?
খন্দকার রুহুল আমিন: আমি আটবার পরিচালক নির্বাচিত হয়েছি, সংগঠনের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছি। ব্যবসায়ী সমাজ আমাকে অনেক ভালোবাসে বিধায় তারা আমাকে কয়েকবার সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করে, কিন্তু রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে আমাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে স্থান দেওয়া হয়নি।
আগামী নির্বাচনে যদি জিবি সদস্যরা আমাকে যোগ্য মনে করেন এবং নির্বাচিত করেন, তাহলে আমি এফবিসিসিআই ‘র সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ী সমাজের স্বার্থরক্ষা করব।
আমি একাধিকবার এফবিসিসিআই থেকে লিডার অফ ডেলিগেট হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সফর করেছি। ব্যবসায়ী ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকদের নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। বিদেশে বাংলাদেশের উপযুক্ত ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে এবং বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য কাজ করেছি। এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন-১. এসএমই খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া ২. সাব কন্ট্রাকটিং শিল্পের উন্নয়ন ৩. প্রযুক্তি ও গবেষণাভিত্তিক রিসার্চ সেল থাকা ৪. একটি আধুনিক তথ্যসমৃদ্ধ সেল গঠন।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এসব বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যদি আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমি হলফ করে বলতে পারি, মাত্র দুই বছরের মধ্যেই চীন, জাপান ও ভিয়েতনামের মতো অগ্রসরমান অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা তৈরি করতে প্রয়াস পাবো।

ব্যবসায়ীদের জন্য বার্তা

বিজনেস ফাইল: ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে আপনার বিশেষ কোনো বার্তা আছে?
খন্দকার রুহুল আমিন: ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কিন্তু আমরা দেখেছি, অনেক সময় রাজনৈতিক কারণে ব্যবসায়ীদের অবমূল্যায়ন করা হয়। রাজনীতি ব্যবসায়ীদের পথে বাধা হওয়া উচিত নয়।
আমি সবসময় সৎ ব্যবসার পক্ষে। আমি জ্ঞানত কোনো অনৈতিক কাজ করিনি, করবও না। আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সমাজকে একটি উন্নত কাঠামো উপহার দেওয়া, যেখানে নতুন উদ্যোক্তারা সহজেই ব্যবসায় প্রবেশ করতে পারবেন।
আমি চাই, ব্যবসায়ী সমাজ সংগঠিত হোক, তাদের ন্যায্য দাবির জন্য ঐক্যবদ্ধ হোক। যদি এফবিসিসিআইতে দায়িত্ব পাই, তাহলে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় আপসহীনভাবে কাজ করব। এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ (জিবি মেম্বার) ভোটাররা চাইলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করতে প্রস্তুত আছি। একবিংশ শতাব্দীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এফবিসিসিআই কে একটা অনন্য মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবো ইনশাআল্লাহ্।
বিজনেস ফাইল: খন্দকার রুহুল আমিন সাহেব, আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার পরিকল্পনার সফলতা কামনা করছি।
খন্দকার রুহুল আমিন: আপনাকেও ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলে আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি ব্যবসায়ী সমাজের সফলতা ও সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০