
বিপ্লব চৌধুরী
৬ষ্ঠ শতকের আরব সমাজ ছিল অজ্ঞতা, বৈষম্য, দাসপ্রথা আর নারী অবমাননার অন্ধকারে আচ্ছন্ন। মানুষের মানবিক মর্যাদা ছিল পদদলিত। ঠিক সেই সময়ে জন্ম নেন মানবতার মহান দিশারি, হযরত মুহাম্মদ (সা.)।তার জন্ম শুধু আরব নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্যই ছিল মুক্তির বার্তা। তিনি এসেছিলেন ভ্রান্ত সমাজব্যবস্থা বদলে সত্য, ন্যায় ও শান্তির ভিত্তিতে মানবিক সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করতে।
ঈদে মিলাদুন্নবী মুসলমানদের জন্য শুধু উৎসব নয়, বরং নবীর জীবনাদর্শ স্মরণের দিন। কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে:“নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের জীবনাদর্শই উত্তম দৃষ্টান্ত।” (সূরা আহযাব: ২১) অতএব, এ দিন আমাদের অঙ্গীকার হোক—নবীর সুন্নাহকে জীবনে ধারণ ও বাস্তবায়ন করা।
প্রিয়নবী (সা.)-এর শিক্ষা সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য ঃ প্রতিবেশীর হক রক্ষা, নারী-পুরুষের মর্যাদা, দারিদ্র্য বিমোচন, ব্যবসায় সততা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ।
আজকের সমাজে দুর্নীতি, মিথ্যা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নবীর শিক্ষা হলো সবচেয়ে কার্যকর দিশা।
আজকের বিশ্বে যখন অসহিষ্ণুতা, সন্ত্রাসবাদ, পরিবেশ ধ্বংস ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রকট—তখন নবীর জীবন আমাদের সামনে দাঁড়ায় এক অনন্য সমাধান হিসেবে।
তিনি শিখিয়েছেন — দয়া ও সহমর্মিতা,শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান,প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীলতা,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
সত্যিই, নবীর আদর্শ ছাড়া টেকসই শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
ঈদে মিলাদুন্নবী মানে কেবল শোভাযাত্রা, আলোসজ্জা বা মাহফিল নয়। এর আসল তাৎপর্য হলো—নবীর চরিত্রকে আত্মস্থ করা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি ও মিথ্যা থেকে মুক্ত থাকা, মানবতার কল্যাণে কাজ করা ।
শুধু বাহ্যিক উৎসব নয়, অন্তরের পরিবর্তনই হতে হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।
আপনার মতামত লিখুন :