Agaminews
Dr. Neem Hakim

প্রসঙ্গ: ঈদে মিলাদুন্নবী


দৈনিক বিজনেস ফাইল প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১২:৪৮ অপরাহ্ন /
প্রসঙ্গ: ঈদে মিলাদুন্নবী

মোঃ আব্দুল কুদ্দুস

হিজরি বর্ষের তৃতীয় মাস রবিউল আউয়াল – এর ১২ তারিখে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশী মুসলিমরা এই দিনকে ঈদ – এ – মিলাদুন্নবী বলে অভিহিত করেন। ঈদ অর্থ খুশী , আনন্দ, আর মিলাদ অর্থ জন্মদিন, জন্মকাল, জন্মস্থান, জন্মোৎসব বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা হয়। ঈদে মিলাদুন্নবী বা মিলাদ- উন- নবী হলো অদৃশ্যের সংবাদদাতা আল্লাহর প্রেরিত সবচাইতে প্রিয় বান্দা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ র জন্ম বার্ষিকী এবং এটি বিশ্ব মুসলিমদের জন্য একটি অত্যন্ত শুভদিন। এই দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের জন্য আনন্দের দিন হিসাবে পালন করা হয়।
এই দিনেই আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির জন্য রহমতস্বরুপ নবী মুহাম্মদ ( সাঃ) কে পৃথিবীতে প্রেরন করেছিলেন।
অপরদিকে এই দিনটি বিশ্ব মুসলমানদের জন্য বেদনা ও বিষাদের দিন। কারন এই দিনেই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু দিবস।
আল্লাহর প্রিয় হাবীবের শুভাগমনের স্মৃতি বিজড়িত রবিউল আউয়াল শরীফের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষা করুন। নূর নবীজির পৃথিবীতে শুভাগমনের ঐতিহাসিক মহিমান্বিত রবকত মন্ডিত দিন বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর খুশী উদযাপনের দিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিবসটি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও আবহমান কাল থেকে পৃথিবীর দেশে দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশেষ গুরুত্বের সাথে পালিত হয়ে আসছে।

এই দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

এই দিনটি উৎযাপন এর মাধ্যমে নবীজির প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

এটি মানবতা, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের নবীর শিক্ষা ও আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার দিন।

মুসলিমরা এই দিনে নবীর জীবন, আর্দশ ও দিকনির্দেশনা স্নরন করে এবং তাকে অনুসরন করার অনুপ্রেরনা লাভ করে।

এই দিনটি মানব জাতির জন্য একটি বড় নিয়ামত ও রহমত হিসেবে বিবেচিত হয় যার জন্য এই দিনটিতে আনন্দ করা হয়।
আবার এই দিনে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিদায় উপলক্ষে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে নফল নামাজ আদায় করা হয়।

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জন্মদিন এবং মৃত্যু দিবস উপলক্ষে আল্লাহ তায়ালা ও রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এর জন্য দান, সাদকা করা,স্নরন সভা, আলোচনা সভা, নফল নামাজ আদায় করা, শোভাযাত্রা, গরীব দুখি মানুষের জন্য খাবার আয়োজন করা হয়।

তোমরা মহামূল্যবান সম্পদ আল-কুরআন ও ইসলাম বা রাসূলে খোদা (সা.)-কে পেয়েছ, এর জন্য আনন্দ করা তোমাদের অন্যতম কাজ। যদি কুরআন মজীদ ও দীন ইসলাম পাওয়ার কারণে আনন্দ করতে হয় তাহলে যার মাধ্যমে কুরআন ও দীন পেয়েছি, যিনি ছিলেন সমগ্র জগতের রহমত, তাঁর আগমন যে কত বড় নেয়ামত ও রহমত তা বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।

কিয়ামতের দিন শাফায়াতের (সুপারিশের) মালিক একমাত্র আল্লাহ, এবং তিনি নবী-রাসুল, ফেরেশতা, শহীদ, এবং নেককার মুমিনদের সুপারিশ করার অনুমতি দেবেন। তবে, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শাফায়াত সবচেয়ে বড় এবং তিনি এই শাফায়াত ‘উযমা’ বা ‘কুবরা’ (সর্বশ্রেষ্ঠ শাফায়াত) করতে সক্ষম হবেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে, যা তার উম্মতের বড় একটি অংশকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

কিয়ামতের দিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বপ্রথম বড় সুপারিশ (শাফাআতে কুবরা) করবেন এবং তার উম্মতদের মুক্তি ও বেহেশতে প্রবেশের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবেন। এছাড়াও, অন্যান্য নবী-রাসুল, ফেরেশতা, এবং কিছু নেক আমল যেমন রোজা ও কুরআনও আল্লাহর অনুমতিক্রমে সুপারিশ করতে পারবে।

তাই বিশ্বে প্রত্যেক মুসলমান নর নারীর উচিৎ সর্বোবস্থায় কিয়ামত দিবসের সুপারিশকারী আল্লাহ তায়ালার সবচাইতে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মান জানানো এবং ঈদে মিলাদুন্নবী দিবসে তার প্রতি বেশি বেশি সালাম ও দরুদ পেশ করা।

খেদা হাফেজ
সকলেই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য দেয়া করবেন। দেখা অন্য একটি পর্বে।

লেখক: জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক পিএলসি।