ঢাকা   ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আব্দুলের ইলিশে শেষ হয় পুজো

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : শনিবার, অক্টোবর ১০, ২০২০
  • 187 শেয়ার
পুজো

দেশ ভাগ হয়েছে। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া। তবু আজও দুই বাংলার আন্তরিকতা যে এতটুকুও কমেনি, তার প্রমাণ মেলে জলপাইগুড়ি শহরের কামারপাড়ার সান্যাল বাড়ির দুর্গাপুজোয়। ফি বছর দশমীর সকালে বাংলাদেশের পাবনা থেকে জোড়া ইলিশ নিয়ে সান্যাল বাড়িতে হাজির হন মহম্মদ আব্দুল।

তাঁর আনা ইলিশ দেবী দুর্গার সামনে কুলোয় রেখে বরণ করেন পরিবারের বধূরা। সঙ্গে থাকে লাউয়ের ডগা ও বেগুন। বাড়ির বধূরা নতুন শাড়ি পরে, মুখে পান দিয়ে ইলিশ না ভেজেই রান্না করেন। তা দিয়েই দেবীর ভোগ হয়। করোনা আবহে এই বছরে রীতি কি সান্যাল বাড়ির দুর্গাপুজো? সান্যালরা জানিয়েছেন, তেমন কিছু ঘটবে না। আর আব্দুল জানান, তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ইলিশ নিয়ে আসার।

অবিভক্ত বাংলাদেশের পাবনা জেলার বখতারপুরে সান্যাল পরিবারের দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল। ১৯৪১ সাল নাগাদ পরিবারের তৎকালীন কর্তা জয়চন্দ্র সান্যাল জলপাইগুড়িতে পুজো শুরু করেন। দেশের বাড়ির ঠাকুর দালানের মাটি মাথায় করে নিয়ে এসে জলপাইগুড়িতে ঠাকুর দালান গড়ে তুলেছিলেন তিনি, কথিত আছে পরিবারে। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো এই পুজো আজও বংশের পরম্পরা মেনেই হচ্ছে।

সান্যাল পরিবারের পুজোয় মহম্মদ আব্দুলদের পূর্বপুরুষেরা জোড়া ইলিশ পৌঁছে দিতেন। সেই রীতি বজায় রাখতেই আজও আব্দুল দশমীতে জোড়া ইলিশ জলপাইগুড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। টেলিফোনে আব্দুল বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। দেখা যাক, কী হয়।’’

সান্যাল পরিবারের এই প্রজন্মের গৌরব, সৌরভ এবং মনোজিৎ ছাড়াও পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সহযোগিতাতেই পুজোর আয়োজন হচ্ছে। পঞ্চমী থেকে পুজো শুরু হয়। সপ্তমীর সকালে পরিবারের লোকেরা কলা বউ স্নান করাতে করলার ঘাটে নিয়ে যান। মৌমিতা কর সান্যাল বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতেও রীতি মেনেই পুজোর আয়োজন করা হবে। তবে বাইরের নিমন্ত্রিতের সংখ্যা কম।’’

=আনন্দবাজার পত্রিকা=

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০