আজাহার আলী সরকার
ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (এডিসি) কমিশনার জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জিসানুল হককে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে তিনি গাজীপুর মহানগর পুলিশের বৈধ আড়ি পাতা শাখায় (এলআইসি) কর্মরত ছিলেন।
রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। গত সোমবার বিষয়টি সামনে আসে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জিএমপির সিটিএসবি অ্যান্ড প্রটেকশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জিসানুল হকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা সমীচীন বিবেচিত হওয়ায় তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
গত ১৯ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করে একটি চিঠি দেয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।
ঐ চিঠিতে বলা হয়, ১২ জুন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাওয়াদ নির্ঝর নামের ফেসবুক আইডিতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টের কমেন্ট সেকশনে জাওয়াদ নির্ঝর নামের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল এর লিংক উদ্ধৃত থাকে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রবেশ করলে ঐদিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ইএসএএফ ফর্ম সম্বলিত একটি টেলিগ্রাম পোস্ট পাওয়া যায়। এর কিউআর কোড পর্যালোচনায় ইএসএএফটি গাজীপুর মহানগর পুলিশ সদর দফতরের এলআইসি শাখার এনটিএমসির এনআইপি সার্ভার থেকে এএসআই মো. আরিফ হোসেনের আইডি থেকে ডাউনলোড হয়।
চিঠিতে আরো বলা হয়, জিএমপির ডিবির (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনের দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায়, জিসানুল হক তার ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নাম্বারের হোয়্যাটসঅ্যাপ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি এলআইসি শাখায় কর্মরত এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত হোয়্যাটসঅ্যাপে আছাদুজ্জামান মিয়ার মোবাইল নম্বরের এনআইডি চেয়ে মেসেজ দেন। এ প্রেক্ষিতে পরিমল চন্দ্র দাস সরকারি নিপ সেবা হটলাইন নাম্বারে এনআইডি সরবরাহের বার্তা দেন। বার্তা পেয়ে ঐদিন রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে এলআইসিতে ডিউটিরত এএসআই মো. আরিফ হোসেন তার নিপ আইডি থেকে ইএসএএফ ডাউনলোড করে হটলাইনের হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের হোয়্যাটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠান।
এতে বলা হয়, পরদিন পরিমল চন্দ্র দাস এটি জিসানুল হকের সরকারি মোবাইল নম্বরের হোয়্যাটসঅ্যাপে পাঠান। ঐ লগইন জিএমপির এলআইসিতে রক্ষিত রেজিস্টারেও পাওয়া যায়। স্পর্শকাতর তথ্য সরকারি উদ্দেশ্য ছাড়া সংগ্রহ করা
অপেশাদার সুলভ আচরণ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিগণিত।
এ অবস্থায় জিসানুল হকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন পাঠানো সাপেক্ষে বর্ণিত কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।