বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
দেশ ও জাতির কল্যাণ, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, ঐক্য, সমৃদ্ধি এবং ঈমানি জিন্দিগি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতে সমবেত লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির কণ্ঠে ‘ইয়া আল্লাহু’ আর‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় টঙ্গীর তুরাগতীরসহ আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা।
ঢাকার কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের সকাল ৯টার দিকে আখেরি মোনাজাত শুরু করেন। ২৩ মিনিটের আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজতের আশায় দুই হাত তুলে অনুনয়-বিনয় করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত প্রার্থনা করেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বয়সের লাখ লাখ মানুষ।
আখেরি মোনাজাতে মাওলানা জুবায়ের কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি এ উম্মতকে রক্ষা করুন। আমাদের ইমানকে শক্ত করুন। আপনি আমাদের মাফ করে দিন। কোটি কোটি টাকা যেন আমাদের ইমানকে কেড়ে নিতে না পারে, আমাদের ইমানকে যেন নষ্ট করতে না পারে, আপনি আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করুন।’
এর আগে আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা ছাড়াও আশপাশের জেলার মুসল্লিরা শনিবার (৩ ফ্রেবুয়ারি) সকাল থেকেই ইজতেমা ময়দানে আসেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আশপাশের মহাসড়ক-সড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় ওই সব সড়ক দিয়ে রোববার ভোর থেকে মুসল্লিরা হেঁটে দলে দলে ইজতেমাস্থলে আসেন। ময়দানের চারদিক দিয়েই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আসেন।
অনেক মুসল্লি মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলি-গলিতে অবস্থান নেন। পুরানো খবরের কাগজ, পাটি ও পলিথিন বিছিয়ে বসে পড়েন। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বাসা-বাড়ি, কলকারখানা-অফিস, দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদীতে নৌকায় মুসল্লিরা অবস্থান নেন। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশ এলাকায় যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই দেখা যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পড়া মানুষের কাফেলা। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ এমনকি নারীরাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার সকালেই টঙ্গী এলাকায় পৌঁছেন।
এদিকে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি এই ইজতেমা ময়দানে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব । একইভাবে ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।