বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
২০১১ সালের ২৫ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরখাস্ত আহ্বান করেছিল জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)। কিন্তু ওই সময় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এসব পদে নিয়োগপ্রক্রিয়া ফের শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে এরই মধ্যে চাকরির আবেদন করা অনেকেই অন্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, আবার কারও কারও মৃত্যুও হয়েছে।
জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) হিসাব সহকারী ৩৬টি ও অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের ২২টি পদে জনবল নিয়োগের আহ্বান করে। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পদ বাড়িয়ে হিসাব সহকারীর ৪৩টি ও অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের ২৮টি পদে নিয়োগে আবার বিজ্ঞপ্তি দেয় জাগৃক। এরপর হিসাব সহকারীর ৩৬টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়। তবে অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের ২৮টি পদে নিয়োগ থেমে থাকে।
এদিকে এই বিষয়ে গত ৬ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় এক অফিস আদেশ জারি করেছে। তবে এরই মধ্যে চাকরির আবেদন করা অনেকেই অন্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কারও কারও হয়তো মৃত্যুও হয়েছে। এই অবস্থায় চাকরির এ পরীক্ষায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি প্রার্থী অংশ নেবেন না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের ২৮টি পদের বিপরীতে ২২ হাজার ৬৭৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। এই পদের নিয়োগ পরীক্ষা মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন (এমসিকিউ) টাইপ হবে। তবে এতে পরীক্ষায় অনিয়ম হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। তাদের দাবি, গত বছরের ডিসেম্বরে ‘হিসাব সহকারী’ পদের পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্ন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। হিসাব সহকারী পদের পরীক্ষার্থী আলেয়া খাতুন পাস করা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়ার বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তদন্ত চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক রাসেল আহাম্মেদ বলেন, ‘সাড়ে ১৩ বছর আগের বিজ্ঞপ্তির অনেকে অন্য চাকরিতে চলে গেছেন বা কেউ কেউ হয়তো এরই মধ্যে মারাও গেছেন। এ অবস্থায় আবেদনকারীদের বড় একটি অংশ পরীক্ষায় অংশ নেবেন না। তাই বেকার যুবকেরা যেন নতুন করে আবেদন করতে পারেন, সে জন্য আগের বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার।
এ নিয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রায় সাড়ে ১৩ বছরের মাথায় নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এটা সত্য, তবে সবকিছু নিয়মমাফিক হবে। পুরোনো বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি সৈয়দ মো. নুরুল বাসির।
হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া আহসান হাবিব বলেন, যারা চাকরির জন্য আবেদন করেছেন, তাদের অধিকাংশের অংশগ্রহণ করতে না পারার বিষয়টি অন্যায্য। এটা কার দোষে হলো তা তদন্তের দাবি রাখে।