ঢাকা   ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দৈনিক বিজনেস ফাইল ই-পেপার (বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪) আদানির সঙ্গে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নে কমিটি গঠনের নির্দেশ সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৮ দিনের রিমান্ডে টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষ, নিহত ৪ আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ তুললেন ভারতীয় সাংবাদিক, জবাবে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাসে সড়ক ছাড়লেন সাদপন্থীরা আর্থিক খাতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা চুনারুঘাটে ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনতার হাতে পিস্তলসহ আটক নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক এমপি মেজর রানা হাসিনা রেজিমের ‘ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট’ এখনো বহাল: পর্দার আড়ালে বাণিজ্য সচিব! দৈনিক বিজনেস ফাইল ই-পেপার (মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪)

১১ কোটি টাকার হিসাবে গরমিল, ফাঁসছেন ব্যাংক কর্মকর্তা

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, মার্চ ১২, ২০২৪
  • 345 শেয়ার

বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
জনতা ব্যাংক লিমিটেডে কর্মরত মো. এনায়েত উল্লাহ নামের এক সিনিয়র অফিসারের ১১ কোটি ২১ লাখ টাকার হিসাবে গরমিল ধরা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে।
দালিলিক হিসাব অনুযায়ী স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও ঋণসহ ওই সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেলেও তার বিপরীতে দুদকের অনুসন্ধানে ১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস মিলেছে। অর্থাৎ ৮২ লাখ ৬৯ হাজার টাকার হিসাব দিতে পারেননি ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।

যে কারণে এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা সূত্রাপুরে ১৪ শতাংশ জমিতে নির্মিত ভবনে ১৬টি ফ্ল্যাটের মালিকানা, নন্দীপাড়ায় সাড়ে ১৩ শতাংশ জমি, সাতারকুলে ১৪ শতাংশ জমি, পূর্ব বাসাবোতে একটি ফ্ল্যাট, উত্তরখানে ৫ শতাংশ জমি, সিদ্ধেশ্বরী ও বাকুশাহ হকার্স মার্কেটে তিনটি দোকানসহ নিজ এলাকা চাঁদপুরে ৯০ শতাংশ জমির মালিকানা। শুধু তাই নয় ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর হিসাবে ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের তথ্যও মিলেছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে। এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়, আপনি জনসংযোগ দপ্তরে যোগাযোগ করেন।

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মো. এনায়েত উল্লাহ ১৯৮৭ সালের ১ ডিসেম্বর জনতা ব্যাংকের গোডাউন কিপার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১০ সালে অফিসার পদে এবং ২০১৬ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে একই পদে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী হাসিনা বেগম একজন গৃহিণী। তাদের দুইটি সন্তান রয়েছে।
অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. এনায়েত উল্লাহর নিজ ও স্ত্রীর নামে সর্বমোট ১ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫১২ টাকার স্থাবর এবং ৮ কোটি ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৪২ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। দালিলিক হিসাব অনুযায়ী সব মিলিয়ে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

অন্যদিকে এনায়েত উল্লাহর আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি ২০১৬-২০১৭ করবর্ষে আয়কর নথি খোলেন। সেখানে তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকের চাকুরির বেতনভাতার সঞ্চয় বাবদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদর্শন করেছেন। অনুসন্ধানকালে উক্ত আয়সহ ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী তার ৪ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৭১৯ টাকার আয় পাওয়া যায়।

ওই আয়ের বিপরীতে পারিবারিক ব্যয় ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৩৪০ টাকা ও ঋণ পরিশোধ ১ কোটি ৩২ লাখ ৬৯ হাজার ৯০০ টাকাসহ মোট ব্যয় পাওয়া গেছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪০টাকা। আয় ছাড়াও তার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকার ঋণ রয়েছে। ওই ঋণসহ তার আয় দাঁড়ায় ১০ কোটি ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪ টাকা।

সার্বিক পর্যালোচনায় স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৫ টাকার সম্পদ এবং পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধসহ তার ব্যয় ১ কোটি ৭৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪০ টাকা যোগ করলে ১১ কোটি ২১ লাখ ১০ হাজার ৮৯৪ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। যার বিপরীতে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া গেছে দুদকের অনুসন্ধানে। অর্থাৎ ৮২ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বলে মনে করছে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা রুজুর সুপারিশ করেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। কমিশন থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানা গেছে।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০