ঢাকা   ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিকদেরকে লড়তে হয়েছে গুজবের বিরুদ্ধেও

নির্মল বার্তা
  • প্রকাশিত : বুধবার, অক্টোবর ২১, ২০২০
  • 147 শেয়ার
গণমাধ্যমকর্মী

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মুখে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক, শারীরিক এবং মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়েছে বলে এক জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে।

১২৫ দেশের এক হাজার ৪০৬ জন সাংবাদিকের ওপর জরিপ চালিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জার্নালিস্ট (আইসিএফজে) এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টো সেন্টার ফর ডিজিটাল জার্নালিজম। সাতটি ভাষায় ওই জরিপ চালানো হয়।

তাদের মধ্যে ইংরেজি ভাষার জরিপের ফলাফল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) প্রকাশ করেছে আইজেনেট।

এদিকে দ্য জার্নালিজম অ্যান্ড দ্য প্যান্ডেমিক সার্ভে থেকে দেখা গেছে, মহামারির কারণে সাংবাদিকদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে নিউজরুমগুলো। পাশাপাশি, সাংবাদিকদের কাজের ধরন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা করোনা সংক্রমণের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে।

এ ব্যাপারে গবেষকদের পক্ষ থেকে ইমেলি বেল, জুলি পোসেট্টি এবং পিট ব্রাউন জানিয়েছেন, জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ সাংবাদিক জানিয়েছেন তাদের পেশাদারী জীবনে এই মহামারিই সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সংকট।

জরিপে অংশ নেওয়া সাংবাদিকদের ৭০ শতাংশ বলেছেন তারা মহামারির কারণে মানসিক চাপে ছিলেন। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই বলেছেন তাদের ওপর মহামারির মানসিক চাপ ছিল নেতিবাচক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা স্নায়ুবিক উত্তেজনা, মেজাজ হারানো, ঘুমের সমস্যা এবং অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে গেছেন।

এছাড়াও, যাদের অধীনে সাংবাদিকরা কর্মরত তাদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া ৭০ শতাংশ সাংবাদিক। তাদের মধ্যে উল্লেখ করে চার জনে একজন বলেছেন পেশাগত প্রয়োজনে তাদের সপ্তাহে অন্তত একবার মাঠে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায়, মালিকপক্ষ থেকে তাদের জন্য কোনো সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এমনকি, ৪৫ শতাংশ সাংবাদিক বলেছেন, একটি মাস্কও মালিকপক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে না।

অন্যদিকে, মহামারির পাশাপাশি সাংবাদিকদেরকে লড়তে হয়েছে গুজবের বিরুদ্ধেও। জরিপে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ সাংবাদিক জানিয়েছেন প্রতি সপ্তাহেই তাদেরকে নতুন নতুন গুজবের সঙ্গে লড়তে হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে পড়ার কারণে পাঠকদের জন্য সঠিক তথ্য পরিবশনের জন্য বাড়তি খাটাখাটনি করতে হয়েছে।

জরিপে অংশ নেওয়া সাংবাদিকদের মতে ৬৬ শতাংশ গুজব ছড়িয়েছে সামাজিক যোগযাগের প্লাটফর্ম ফেসবুকের মাধ্যমে। ৪২ শতাংশ গুজব ছড়িয়েছে টুইটারের মাধ্যমে, হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়েছে ৪২ শতাংশ গুজব।

অপরদিকে, সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া ৫০ শতাংশ সাংবাদিক, তাদের উপার্জন অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গগত, এই জরিপের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির প্রভাবের একটি অংশ কেবল উন্মোচিত হয়েছে। জরিপ পরিচালনাকারী সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে – মহামারি পরবর্তী পৃথিবীর রূপরেখা তৈরির ক্ষেত্রে তাদের জরিপের এই ফলাফল আমলে নেওয়া হবে এমন প্রত্যাশা তাদের।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০