হিল্লোল কল্লোল
দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন- এফবিসিসিআই’র বর্তমানে কোন আয় নেই, এফডিআর (FDR) ভেঙ্গে বর্তমান প্রশাসকসহ অন্য কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। যে সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকা অনুদান দিত, অ্যাসোসিয়েশন কিংবা বিভিন্ন চেম্বার কে আর্থিক সহয়তা দিত সেই সংগঠন নিজেই তার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে পারছে না। আনিসুল হক সভাপতি থাকা অবস্থায় বিশ কোটি টাকা অনুদান এনে বিভিন্ন চেম্বার্সকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। যেমন কিশোরগঞ্জ চেম্বারকে দিয়েছিলেন ৬০ লাখ টাকা। গত কয়েক টামে এফবিসিসিআই তে কেউ অনুদানও আনতে পারছে না। নেই কোন ট্রেনিং প্রোগ্রাম, নেই কোন প্রকল্প। ব্যাপারটা হয়েছে এমন যে অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়। সর্বশেষ দু’তিনটে নির্বাচনে এতটাই দুর্বল নেতৃত্ব এসেছিল যে তাদের নিজেদেরই অভাব কাটেনি, এ কারণে যা ফান্ডে ছিল তা শেষ করে গেছেন এমনটিই বক্তব্য অনেক জিবি মেম্বারদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায় অনেক এসোসিয়েশন/চেম্বার ফান্ডে রয়েছে কোটি কোটি টাকা।
সর্বশেষ এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে ১২০ দিনের জন্য নিয়োগ দেয়। দৈনিক বিজনেস ফাইলকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন যতদূর দেখছি এফবিসিসিআই সদস্যরা বর্তমানে ভীষণভাবে নির্বাচন মুখি।বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তথা আমাদেরকে নিয়ে তাদের প্রত্যাশা ও কম নয়। আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি, আমরা এ প্রতিষ্ঠানের সম্মান, মর্যাদা রক্ষা করতে পারবো ইনশাল্লাহ। হাটখোলার এফবিসিসিআই ভবন নিয়ে যে জটিলতা ছিল অর্থাৎ কম টাকায় যে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল জিবি সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে সেই চুক্তিটি ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এখন (এটা হয়তো) ভবনের কিছু অংশ বিভিন্ন স্টাডিং কমিটির ইনোভশনের জন্য ব্যবহার হবে,আর বাকি অংশ ভাড়া দেয়া হবে। তিনি বলেন এবিসিসিআইতে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে চারজন সহায়ক সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বার, মেট্রোপলিটন সহ কয়েকটি চেম্বার থেকে প্রতিনিধি চেয়েছিলাম আমরা তা পাইনি।এখন কিছু চেম্বার প্রতিনিধির নাম এসেছে এগুলো নিয়ে আলোচনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এফবিসিসিআই তে কর্মরত কিছু কর্মকর্তার (যাদের এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই) বিপরীতে অনেক অর্থ খরচ হচ্ছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমরা তো তাদের চাকরিচ্যূতো করতে পারব না। নির্বাচনের পর এফবিসিসিআই যখন ফাংশনাল হবে তখন তাদের কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব বাড়বে। আমরা এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। এছাড়া বিগত দিনে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য একটা বড় চেক দেওয়া হয়েছিল সেটার অর্থ আমাদের পরিশোধ করতে হয়েছে। এখন এফডিআর এর অর্থ দিয়েই কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি পরিশোধ করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন এফবিসিসিআইতে আয় না থাকলে বিশাল চাপে পড়বে এ প্রতিষ্ঠানটি। নির্বাচন তফশিল ঘোষণা করলে তখন হয়তো কয়েক কোটি টাকার চাঁদা আসবে, এটাই এখন দেখা যাচ্ছে।
আর ইতিমধ্যে এফবিসিসিআই জিবিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সকল সংস্কার প্রস্তাব আমরা বাণিজ্য সংগঠন মহাপরিচালক (ডিটিও) মহোদয়ের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। শীঘ্রই এ বিষয়ে যথাযথ আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটা ফ্রুটফুল রেজাল্ট পাবো বলে আশা করছি। সংস্কার বিষয়ে আমরা জীবীসদস্য, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, এফবিসিসিআই বিশ্লেষক, বিজনেস পত্রিকা সমূহ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এ প্রতিষ্ঠান একটি সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য হোক এবং জিবি সদস্যদের প্রিয় এবং সম্মানিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক এটা তারা চান। আমাদের সার্বিক কর্মকান্ডে তাদের আশানুরূপ সাড়া মিলেছে। যাচাই-বাছাই, সকলের প্রত্যাশিত বিষয়টি সামনে রেখে কর্তৃপকে এগুচ্ছে। চলতি মাসেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (বিধি তৈরি শেষে (দ্রুত একটি ভালো সিদ্ধান্ত দেবে বলে আমার ধারণা।
চলতি মাসেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।