আজাহার আলী সরকার
ছাগলকাণ্ডের সূত্র ধরে আলোচনায় আসেন সাদিক এগ্রোর ইমরান হোসেন। সেই তদন্তে বেরিয়ে আসে গরুকাণ্ড। এবার আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু বিক্রি ও পালনের অভিযোগে সাদিক এগ্রোর মালিক ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, সরকারি সম্পদের ক্ষতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলের সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ঘটনা সামনে আসায় আলোচনায় আসে খামারটি। এছাড়াও দুইটি ব্রাহমা জাতের গরু আড়াই কোটি টাকায় বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয় সাদিক এগ্রো।
পরে জানা যায়, বিক্রির উদ্দেশ্যে আমদানি নিষিদ্ধ হলেও, জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ২০২১ সালে আমেরিকা থেকে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করে সাদিক এগ্রো। পথে মৃত্যু হয় একটি গরুর। বাকি ১৭টি পশু বাজেয়াপ্ত করে, সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে পাঠায় কাস্টমস। এরপর সেখানে মারা যায় দুটি গরু। তিন বছরে ১৫টি গরুর জন্য মোট খরচ হয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। প্রতিটির পেছনে মাসে খরচ সাড়ে চার লাখ টাকা।
এ বছরের মার্চে বেসরকারি খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনে মাংস বিক্রির জন্য নিলামে ছাড় করানো হয় এসব গরু। পরে তা যায় সাদিক এগ্রোতে। প্রতিষ্ঠানটি বেআইনিভাবে কোরবানির সময় দুটি গরু বিক্রি করে। পুরো বিষয়টি ঘটে সাদিক এগ্রোর মালিক তৌহিদুর রহমান জেনিথ এবং সাদিক এগ্রোর ইমরান হোসেন সাদেকের পরিকল্পনায়।
দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করল কিনা। এগুলো দেখার জন্য তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে দেখা হয়েছে, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কেউ জড়িত কিনা, সেখানেও আমাদের টিম গেছে।
এরপর আলোচিত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের ছেলের ছাগল কেনার ঘটনায়, বেরিয়ে আসে এই চক্রের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য। যার ভিত্তিতে অভিযানে নামে দুদক। জব্দ করা হয় ছয়টি ব্রাহমা গরু।
জহুরুল হক বলেন, গরুগুলো নিলাম করা হয়েছিল মাংস বিক্রির জন্য। সে গরু কীভাবে বিক্রি হলো। তারপর অবৈধভাবে বিক্রি করা হলো কিনা, আমাদের অনুসন্ধান কর্মকর্তা দেখবে। খোঁজ নেবে।
বাকি সাতটি গরু দুই প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে দুদকের গোয়েন্দারা। অনুসন্ধান এবং তদন্ত চলছে।