বিজনেস ফাইল ডেস্ক
দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাতটিতে প্রতিযোগিতার চর্চা বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। গতকাল শনিবার এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে আয়োজিত ‘পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সিনারিও ইন বাংলাদেশ: এনসিওরিং এনার্জি সিকিউরিটি ফল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মূল সমস্যা হলো এখানে প্রতিযোগিতা ছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আমরা প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। এ জন্য ব্যবসায়ীসহ সবার সহযোগিতা আহ্বান করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপাদেষ্টা। তিনি জানান, ইতোমধ্যে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কিছু মৌলিক জ্বালানি ক্রয়ের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক দামে জ্বালানি ক্রয়ের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
দেশের বিদ্যুৎ খাতে বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা। আর জ্বালানি খাতে বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এমন তথ্য জানিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সব সরকারের আমলেই দেশে মৌলিক জ্বালানির উন্নয়ন অবহেলিত ছিল। যার প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎসহ সমগ্র জ্বালানি খাতে। সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে ব্যাপক হারে কয়লা ও গ্যাসের কূপ খনন করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সিস্টেম লস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পাশাপাশি, সাশ্রয়ী জ্বালানি কৌশল গ্রহণ, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনা, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানিতে বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেয়া, একক জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে আনাসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।
সেমিনারে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি।
ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) নির্বাহী পরিচালক এবং সিইও মো. আলমগীর মোর্শেদ বলেন, সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য জ্বালানি পেতে হলে আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে যেতে হবে। এক্ষেত্রে নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম বড় সুফল বয়ে আনতে পারে বলে জানান টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান খোন্দকার মো. আব্দুল হাই।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও সহায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হক, গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী (খোকন), এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল উপদেষ্টা ব্রিগ. জেন. (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদউল্লাহ ও ব্যবসায়ী নেতারা।