লেডিস্ ক্লাবের অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতা মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ
বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর লেডিস্ ক্লাবে বসে ছিল ব্যবসায়ীদের মিলনমেলা। মাঘ মাসের শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে অনুষ্ঠানে আসে প্রায় সহস্রাধিক ব্যবসায়ী সদস্য। প্রত্যেকের উদ্দেশ্য একটাই- এ অনুষ্ঠানে নতুন কিছু উপভোগ্য হবে, নতুন কিছু জানা যাবে। আমন্ত্রণপত্রে এমনটাই কৌশল সাজানো ছিল। অনুষ্ঠান আয়োজক এস এস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মু. আবু সাদেক অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য রেখেছিলেন বার বি কিউ। সন্ধ্যা ৬টার পরপরই জীবী সদস্যরা আসতে শুরু করেন অনুষ্ঠানস্থলে, ঘন্টাখানেকের মধ্যেই যথারীতি পূর্ণ হয়ে যায় অডিটোরিয়াম। সুনসান নিরবতা ভেঙে বেজে উঠে সানাইয়ের মিষ্টি সুর। নীরবতা ভেঙে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে আনন্দের উদ্দীপনা চলে আসে। মাস তিনেক আগে অন্য ভেন্যুতে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ এমন একটি জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেটা ছিল এফবিসিসিআই নির্বাচন ২০২৩-২০২৫ এর উপলক্ষে অনুষ্ঠান।
অতিথিরা গরম কফির চুমুকের সাথে ইচ্ছেমতো শীতের পিঠা খাচ্ছিলেন তৃপ্তি সহকারে। গতকালের অনুষ্ঠানে জীবী সদস্যদের অনেকেই তাদের বক্তব্যে বলেন- বিগতদিনে এফবিসিসিআইতে নির্বাচনের নামে যা হয়েছে এরকম আর যেন না হয়। অনেকেই বলেন, ব্যবসায়ীরা জেগে উঠেছে। এখন আর আমাদের জিম্মি করে কেউ কিছু করতে পারবে না। তারা বলেন, একবিংশ শতাব্দির অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিকমানের এফবিসিসিআই গড়তে প্রথমেই প্রয়োজন সভাপতিসহ সকল পদে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। অটোপ্রথাকে চিরতরে বিলুপ্ত চান অধিকাংশ জীবী। দরকার এফবিসিসিআইতে একটি বিশাল গবেষণা সেল। নির্বাচিত এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। একই সাথে যতই দিন যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের অবস্থা ততোই খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিদেশিরা বিনিয়োগ করছে না, রিজার্ভ কমে গেছে। দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালের বাইরে। ব্যাংক ঋণের সুদহার বেড়ে গেছে। যানজটে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। কথাগুলো অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বললেন, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক ব্যবসায়ী নেতা মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি আবারো সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বেসিক কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। না হলে আমরা আমাদের ব্যবসা ধরে রাখতে পারবো না। এস এস গ্রুপের ২০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সভাপতি মু. আবু সাদেক উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। নিজের জন্য দোয়া কামনা করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন রাজেশ।
শেষ পর্যন্ত লোভনীয় আতিথেয়তা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর লটারির মাধ্যমে শেষ হলো এস এস গ্রুপের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ আয়োজনে সারাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের এসোসিয়েশন ও চেম্বার নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। উপস্থিত হন ব্যবসায়ীদের আইকন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, সাবেক পরিচালক আলহাজ¦ মো. বজলুর রহমান, মাহবুব ইসলাম রুনু, আফতাব জাবেদ, সহিদুল হক মোল্লা, সাত্তার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ সাত্তার খান, সমমনা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিন খান, নাজমুল করিম কাজল বিশ^াস, সরোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী, আসলাম আলী, আওলাদ হোসেন রাজীব, মোশতাক আহমেদ বিপ্লব প্রমুখ।
অনুষ্ঠান টুকিটাকি: অনুষ্ঠান স্থল মিনি নির্বাচন প্রচারণা অনুষ্ঠান দাবি করে সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, অনুষ্ঠানে এসে ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে সামনে একটা ভালো নির্বাচন হবে।
সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ বলেন, আমাকে কেউ কেউ আওয়ামী দোসর বলে বাহাস করেন অথচ আওয়ামী লীগ আমলে আমার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। আমি এফবিসিসিআই একজন জীবী সদস্য হিসেবে সকলের কাছে দোয়া চাই। আমি ব্যবসায়ী হিসেবেই বেঁচে থাকতে চাই।
আলহাজ্ব মো. বজলুর রহমান বলেন, আমি সকল জীবীদের শুভ কামনা জানাই।
সহিদুল হক মোল্লা উপস্থিত জীবী ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ আমাদের প্রাণ। আমাদের নেতা মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ-এর জন্য সকলে দোয়া করবেন।
অনুষ্ঠানে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতৃত্বাধীন গত নির্বাচনে বিজয়ী অধিকাংশ পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ-এর নেতৃত্বকে শক্তিশালী এবং গ্রহণযোগ্য মনে করেন তিনি।
এছাড়া অনেকেই বলেন, তিনি সভাপতি প্রার্থী হলে ব্যবসায়ীদের সার্বিক কল্যাণ কাজ করবেন এমন প্রতিশ্রুতি তিনি নির্বাচনের পূর্বেই দিতে পারেন। তিনি যা বলেন, তা এতোদিন করেছেন। আমরা তার জন্য সকলের দোয়া চাই।
উপস্থিত একজন জীবী বলেন, ব্যবসায়ীদের এ ধরনের আয়োজন থেকে আমাদের অনেক কিছু জানা, শোনারও সুযোগ হয়।