ঢাকা   ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দৈনিক বিজনেস ফাইল ই-পেপার (বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪) দৈনিক বিজনেস ফাইল ই-পেপার (মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪) সাবেক এমপি শম্ভু ৬ দিনের রিমান্ডে বাংলাদেশি পর্যটক কম, কলকাতার ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস বেক্সিমকো ফার্মায় রিসিভার নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো উচিত হয়নি: রিজভী নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্র আর নেই ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আইজিপিকে চিঠি ব্যাংক মালিকদের এফবিসিসিআইতে সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই না: মাহবুবুর রহমান খান শেরপুর সদর হাসপাতালের অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকের গলা চেপে ধরলেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা

টানা তৃতীয় দিনের মতো চলছে শ্রমিকদের অবরোধ, ভোগান্তি চরমে

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : সোমবার, নভেম্বর ১১, ২০২৪
  • 18 শেয়ার

বিজনেস ফাইল ডেস্ক
বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকায় টি এন জেড গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তিনদিন ধরে চলা অবরোধ নিরসনে পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বারবার চেষ্টা করেও এর সমাধান করতে পারছে না।

টানা তিন দিনের এই অবরোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর থেকে টঙ্গী ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস থেকে কড্ডা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে দেখা যায়, শ্রমিকদের কেউ রাস্তায় বসে আছেন, কেউ কেউ স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের অধিকাংশের হাতেই লাঠিসোঁটা। কোনো যানবাহন যাওয়ার চেষ্টা করলেই সেগুলো আটকানোর চেষ্টা করছেন। রাতে যেসব শ্রমিক সড়কে অবস্থান করেছেন, তাঁদের অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন, আবার নতুন করে মহাসড়কে এসে অবস্থান নিচ্ছেন শ্রমিকদের আরেকটি অংশ। মাইকে তাঁদের সংঘবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছিলেন কেউ কেউ।

অবরোধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। চালকেরা বলছেন, গত তিন দিন এক স্থানে আটকা থাকায় তাদের নানামুখী সমস্যা হচ্ছে। পুলিশ বলছে, সঙ্কট নিরসনে তারা কারখানা মালিকের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে টি এন জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড গ্রুপের ৬টি কারখানার শ্রমিকেরা শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন। এক পর্যায়ে তাঁরা মালেকের বাড়ি কলম্বিয়া মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবি আদায়ে গত তিন দিন ধরে তারা সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের একটি অংশ রাতেও মহাসড়কে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

খবর পেয়ে কয়েক দফা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবে এখনও সড়কে অবস্থান করছেন আন্দোলন করা শ্রমিকেরা।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলছেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বরে কারখানা খুললেও আমাদের চার মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিতে টালবাহানা করছে। সেজন্য তাঁরা বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। বেতন বকেয়া থাকায় তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

লাগাতার অবরোধ ও বিক্ষোভের কারণে পুরো স্থবির ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িগুলো এক জায়গায় আটকে আছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অবস্থা বেশি খারাপ। অনেকে পায়ে হেঁটে বা হালকা যানবাহনে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

এদিকে, শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বকেয়া বেতন পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে বিকল্প সড়ক ব্যবহারে অনুরোধে করে একটি ট্রাফিক আপডেট দেয়া হয়েছে। ওই আপডেটে বলা হয়েছে- ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীবৃন্দের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গার্মেন্টসের শ্রমিক কর্তৃক ভোগড়া বাইপাস ও মালেকের বাড়ির মাঝামাঝি কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে (শনিবার) সকালে শুরু করা মহাসড়কে অবরোধ অব্যাহত আছে। বিধায়, সম্মানিত যাত্রীগণকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, আমরা শনিবার আন্দোলনের শুরু থেকেই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম ডিভিশন, ট্রাফিক ডিভিশন, শিল্প পুলিশ ও যৌথ বাহিনী মিলে কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে টি এন জেডের শ্রমিকদের বারবার বলেছি রাস্তাটা ছেড়ে দিয়ে সরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা বেতন পাচ্ছে না, এটার দাবিতে তারা অবস্থান নিয়েছে। আমরা মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘মালিকপক্ষকে একাধিকার সময় দেয়া হয়েছিল, ওনারা বারবার বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে শ্রমিকেরা এখন আর আমাদের কথা বিশ্বাস করছে না।’

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০