নিজস্ব প্রতিবেদক
কর্মক্ষেত্রে অবৈধ চাকরিচ্যুতির আদেশ বাতিল করে ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ চাকরিতে পুনর্বহাল এবং সেই সঙ্গে আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের চাকরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিত কর্মীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘চাকরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক আবু সাদাত মো. শোয়েব।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। অপর দুটি দাবি হচ্ছে- গত ২০১০-২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানের মুনাফার ৫ শতাংশ বিলম্ব বিতরণে জরিমানাসহ সকল বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করা এবং শ্রমিকদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালানোর দায়ে জড়িত গ্রামীণফোনের সিই্ও ও সিএমও-সহ তাদের সকল অনুসারী অত্যাচারী ম্যানেজারসহ ইউনিয়নের বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
‘দাবি আদায় না হলে আরো কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে’ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যতদিন শ্রমিকদের পাওনা ও দাবিগুলো মানা না হবে, ততদিন গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচিসহ আরো কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বৈষম্যের শিকার বর্তমান এবং সাবেক শ্রমিকদের আইনগত পাওনা ‘অংশগ্রহণ তহবিল’ ও ‘কল্যাণ তহবিল’-এর বিলম্ব জরিমানার টাকা পরিশোধ না করে পরিকল্পিতভাবে আইন লঙ্ঘন করে টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে। শ্রমিকদের বঞ্চিত করার হীন উদ্দেশ্যে গত ১৫ বছর মামলা ঝুলিয়ে রেখে এবং আইনগতভাবে পাওনা টাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
সবাদ সম্মলেনে দাবি করা হয়, বিভিন্ন অজুহাতে গ্রামীণফোন লিঃ শ্রমিক ছাটাইয়ের এই মেগা প্রকল্প হাতে নেয় এবং ছাটাইয়ের প্রকল্প ক্রমাগতভাবে বাস্তবায়ন করছে। নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী ছাটাইয়ের প্রকল্প হাতে নিয়ে সেই টার্গেট বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত গ্রামীণফোন অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন- ইচ্ছাকৃত ভাবে রে রাখা, ফোন করে ভয়ভীতি প্রদর্শন, ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া, যে কাউকে বদলি করা, অতিরিক্ত কাজের টার্গেট দেওয়া, জরুরি কাজের কথা বলে অফিসে তলব করা, কোড অফ কন্ডাক্ট ভঙ্গ করা; (জ) ট্রেনিং ও কাউন্সেলিং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা -যাতে করে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণে বাধ্য হয়। এতো কিছুর পর কেউ যদি স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তাৎক্ষণকি ছাঁটাইয়রে শিকার মার উদাহরণ কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই গত ২০ জুন-২০২১ তারিখে শুধুমাত্র একটি আদেশের মাধ্যমে ১৫৯ জন দক্ষ ও অভিজ্ঞ স্থায়ী কর্মীকে আকস্মিকভাবে ছাঁটাই করা হয়।
এসব বেআইনি অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।