চাঁদপুর প্রতিনিধি
পূবালী ব্যাংক পিএলসি চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী (৪০) দুই গ্রাহকের কাছ থেকে দুই কোটি ৫১ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিখোঁজ ব্যাংক ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা।
ব্যাংকের নিয়মিত গ্রাহক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আকবর হোসেন লিটন বলেন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী গত ১৪ জানুয়ারি এই শাখায় যোগদান করেন। এরপর থেকেই তার সঙ্গে পরিচয়। ঈদের আগে তিনি আমার কাছ থেকে টাকা ধার চান। কয়েক দিনের মধ্যে ফেরত দেবেন বলে কথা দেন। আমিও সরল বিশ্বাসে তাকে এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা দিই। কিন্তু তিনি টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকেই চলে গেলেন। কীভাবে কী করলেন বুঝেই উঠতে পারিনি। এই ঘটনায় আমি ১৩ এপ্রিল চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেছি।
আরেক গ্রাহক কচুয়া উপজেলার আশ্রাফুর এলাকার দলিল লেখক মারুফ। অধিক মুনাফা দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী নেন ৭৫ লাখ টাকা।
মারুফের আত্মীয় একই ব্যাংকের গ্রাহক নাছির উদ্দিন খান বলেন, অধিক মুনাফা দেওয়ার কথা বলে আমার আত্মীয় মারুফের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকা না দেওয়াতে ঈদের আগে তার সঙ্গে দুইবার বৈঠকও করা হয়েছে। ঈদের পর টাকা ফেরত দেবে বললেও এখন তিনি নিখোঁজ।
এদিকে শ্রীকান্ত নন্দী গত ৪ এপ্রিল বিকেল ৩টার পর ব্যাংক থেকে নিখোঁজ রয়েছে মর্মে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জিডি করেছেন বর্তমান দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির। তিনি ওই জিডিতে উল্লেখ করেন শ্রীকান্ত নন্দীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দায়িত্বরত শাখা ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির বলেন, ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে আমাকে এই শাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) এই শাখায় যোগদান করেছি। শ্রীকান্ত নন্দীর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি অবগত করা হয়েছে এবং থানায় জিডি করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। তবে এ ঘটনায় আমাদের অভ্যন্তরীণ গ্রাহকদের লেনদেনে কোনো সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল বলেন, ঈদের পূর্বে ৯ এপ্রিল পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. হুমায়ুন কবির ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী নিখোঁজ রয়েছেন মর্মে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সে ডায়েরির আলোকে আমাকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় একাধিক জিডি হয়েছে। একটি মামলাও হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংক হেড অফিসের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ওই কর্মকর্তা নিখোঁজ হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।