আব্দুল্লাহ আল মামুন , ফেনী
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, ৫ মে শাপলা চত্বরে গণহত্যা ও চব্বিশের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার সংগঠনটির উদ্যোগে ফেনী জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের মিজান ময়দানে অনুষ্ঠিত গণ ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এছাড়া দেশের স্বার্থেই সব মত-পথ ও ঘরানার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের দেশ চরম সঙ্কটকাল পার করছে। চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগোতে হচ্ছে দেশটাকে। রাস্তাঘাটে অপরিচিত নারী দেখামাত্রই অযাচিতভাবে তার পোশাক নিয়ে নৈতিক সবক দেয়া ইসলামের দাওয়াতি পন্থার মধ্যে পড়ে না। দাওয়াত এমনভাবে দিতে হবে যাতে কেউ বিব্রতকর অবস্থায় না পড়েন। পুরুষের জন্য চোখের নজর হেফাজত যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি নারীর জন্যও পর্দা ও শালীন পোশাক অতীব গুরুত্ববহ। বিশেষত রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় এ ব্যাপারে নারী-পুরুষ উভয়কেই সচেতন থাকতে হবে, যাতে কারো অশালীনতা অন্যের জন্য অসুবিধার কারণ না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশে প্রগতিশীল সেক্যুলার উগ্রতা দিন দিন বাড়ছে। তার প্রতিক্রিয়ায় ওলামায়ে কেরামের সম্মিলিত নেতৃত্বের বাইরে গিয়ে হঠকারী কর্মকাণ্ডও লক্ষণীয়। কোনো বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবর্গের হঠকারী কর্মকাণ্ডের দায় তৌহিদি জনতা নয়। নেতৃস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের পরামর্শ না নিয়ে হুট করে আবেগবশত কোনো ঘটনায় জড়িত হওয়া উচিত নয়।
কারণ, কোনো ভুল হলেই ওয়ার অন টেরর-এর ভোকাবুলারি ব্যবহার করে তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর মওকা পেয়ে যায় একদল ইসলামবিদ্বেষী লোক, যারা প্রগতিশীল সেক্যুলারদের উগ্রতার বেলায় সবসময় নীরব থাকে।
এমনকি রাসূল (সা.) ও আল্লাহকে কেউ গালি দিলেও তারা ব্যক্তিগতহীন স্বার্থে চুপ থাকে। এসব ভণ্ড ও মুনাফেকরা যাতে তৌহিদি জনতাকে নিয়ে বিতর্ক তোলার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
সম্প্রতি একদল উগ্র প্রগতিশীল নারী প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়ার অধিকার চেয়ে আন্দোলন করে আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মা-বোনদেরও লজ্জার মধ্যে ফেলেছেন। তাদের সামাজিক মূল্যবোধের এতটা অধঃপতন দুঃখজনক। নারী-পুরুষ যে-ই হোক, রমজান মাসে প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়া শুধু আইনের লঙ্ঘনই নয়, একইসাথে জনপরিসরে রমজানের পবিত্রতার প্রতি অশ্রদ্ধার শামিল। ন্যূনতম ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি যারা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারে না, তাদের পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক।
হেফাজতে ইসলাম ফেনী জেলা সভাপতি মাওলানা আফজালুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শামসুল হক জিলানী, ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক গাজী হাবীবুল্লাহ মানিক, আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী, এয়াকুব নবী, জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আবদুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন জেলা সভাপতি গাজী এনামুল হক, সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক ভুঁইয়া, ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, এবি পার্টির শাহ আলম বাদল, ফেনী জেলা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি মুহাম্মদ সোহেল, হেফাজত ফেনী জেলা শাখার উপদেষ্টা মুফতি আহমদুল্লাহ কাসেমী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি সাইফুদ্দিন কাসেমী, সহ-সভাপতি মাওলানা ইসমাইল হায়দার, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা মমিনুল হক জদীদ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ আলি মিল্লাত, মুফতি কাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জালাল উদ্দীন ফারুক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সানা উল্লাহ, মাওলানা মোজাফফর আহমদ জাফরী, সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা আজিজ উল্লাহ আহমদী প্রমুখ।