Agaminews
Dr. Neem Hakim

ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান ড. মকবুল আহমেদ খানের সংবাদ সম্মেলন


দৈনিক বিজনেস ফাইল প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন /
ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান ড. মকবুল আহমেদ খানের সংবাদ সম্মেলন

পলাশ দাস, স্টাফ রিপোর্টার
ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান European University of Bangladesh তে সম্প্ৰতি সংঘটিত ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে জালিয়াতি ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের সামনে ড. মকবুল আহমেদ খান বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আমার দীর্ঘ সময়ের দায়িত্ব পালন করছি। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছি। সর্বশেষ ২০২৩ সালে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডে ভাইস চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করছি।
২০২৪ সালের অগাস্টের পর কতিপয় শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি এবং আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ পরিস্থিতির সুবিধা নিয়ে আমার ছেলে, আহমেদ ফরহাদ খান, জোর জবরদস্তি করে আমাকে পদত্যাগপত্র সই করিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে আমার ছেলে আহম্মদ ফরহাদ খান নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় দখলের জন্য তার আশ্রিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা আমাকে বাধা প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না প্রায় এক বছর। আমি বারবার প্রবেশের চেষ্টা করেও পারিনি, সন্ত্রাসীদের দ্বারা লাঞ্চিত হয়েছি।

এই সুযোগে আমার অজান্তেই আহমদ ফরহাদ খান অবৈধভাবে স্বাক্ষর এবং নথি জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে ৪ জন সদস্যকে সম্পূর্ন অবৈধ পদ্ধতিতে অন্যায়ভাবে অপসারন করে এবং তার স্ত্রী বি বি আয়েশা লুবনার দুইজন আত্মীয়কে ঢুকিয়ে RJSC তে নতুন ট্রাস্টি বোর্ডের অনুমোদন করিয়ে নেয়। যা সম্পূর্ন ভূয়া, অবৈধ এবং অন্যায়। এদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলেন সাবেক জেলা জজ হেলাল চৌধুরী, যিনি তার বিচারবিভাগের সাবেক কাজের অভিজ্ঞতা এবং পাওয়ার খাটিয়ে এসব অন্যায়ে নগ্ন হস্তক্ষেপ করাচ্ছেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে ইউনিভার্সিটির ভেতরে বসে আইনের লোক হয়ে নানান বেআইনী কাজ করে চলেছেন।

আমরা এটি জানতে পেয়ে এই অবৈধ ভুয়া মেম্বারদের অপসারনের প্রতিকার চেয়ে RJSC তে লিখিত চিঠির মাধ্যমে অবহিত করি। RJSC আমার চিঠি পেয়েও কোনরূপ ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের অবৈধ কার্যকলাপ চলমান রাখে এবং আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ বোর্ডকে অন্যায়ভাবে ভেঙে দিয়ে ৪ জনকে অপসারন করে নতুন বোর্ড এর অনুমোদন দেয়। এই পর্যন্ত RJSC তে তিন বার লিখিত চিঠি দিলেও তাদের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। বরং RJSC অবৈধ সুবিধা নিয়ে এই অন্যায় কাজ সংঘটনে সাহায্য করে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে আমার ছেলে তার বোন, ভগ্নিপতি এবং শ্বশুড়বাড়ীর আত্মীয়দের বুঝিয়ে এই অন্যায় দখল কাজে সম্পুর্নরূপে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে এবং প্রতিবাদ করলে আমাকে প্রাণ নাশ সহ নানান ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। আমার ব্যাপারে নানান মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নানান জায়গায় তা প্রচার করে বেড়াচ্ছে। এমনকি আমাকে পাগল ও মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও নানান দায়ীত্বশীল জায়গায় মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি শারিরীক ও মানসিকভাবে সম্পুর্ন সুস্থ, যা আমার নিয়মিত ডাক্তারি চেক আপেই প্রমানিত। এমতাবস্থায় আমি আমার জীবনের ঝুঁকি অনুভব করি এবং বেশ কিছুদিন থেকে নিজের বাসায় তাদের সাথে অবস্থান করতেও চরম বিপদ অনুভব করে আমার ভাই সাবেক এমপি এম এইচ খান মঞ্জুর বাসায় অবস্থান করে কোনরূপ দিন পার করছি।

আমার সারাজীবনের সঞ্চিত অর্থ সম্পদ বিনিয়োগ করে আমার স্বপ্নের প্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়টি গঠন করি। স্বল্প খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানই ছিল আমার প্রধান ইচ্ছা। বর্তমানে আমি এই চক্রান্ত ও চরম জুলুমের শিকার হয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারছি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই অবৈধ ট্রাস্টি বোর্ড তাদের ইচ্ছামত যাচ্ছেতাইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ আত্মসাৎ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ক্রয় করা প্রথম ক্যাম্পাস শ্যামলি রূপায়ন শেলফোর্ড ভবনের ১৫০০ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্লোর ব্যক্তি নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়া। যার বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রুফটপের ২০০০০ স্কয়ারফুটের স্টিল স্ট্রাকচার বিক্রি করে দেয়া,যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এই সকল অন্যায় নিয়ে কথা বলতে যেয়ে আমি হামলার শিকার হচ্ছি। আমার ভাইসহ আমার সমস্ত শুভাকাঙ্খী লোকজনকে টার্গেট করেও হামলা চালানো হচ্ছে, সাইবার অপরাধ সংগঠিত করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন ছাত্ররা যখন সত্য বিষয়টি উপস্থাপন করছে তখন তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী দ্বারা হামলা করা হচ্ছে। তাদের শোকজ করা হচ্ছে এবং কয়েক জন ছাত্রকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করেছে। ছাত্রদের নিয়মিত বহিস্কারের হুমকি ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দ্বারা প্রাননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বারবার প্রাননাশের হুমকি দেওয়াতে আমি নিজেও আমার ছেলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমার কোন ছেলেমেয়ে কোনদিন নিজের যোগ্যতায় কোন চাকুরী করেনি। আমার তৈরি করা ফরচুন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেই পরিবার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারাজীবনের আয় আমি তাদের লেখাপড়া, তাদের ভবিষ্যতের পেছনেই খরচ করেছি। তারা আমার মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই আমার সর্বস্ব দখল করে নিয়েছে, আমার পেছনে সার্বক্ষণিক ভাড়াটে গুন্ডা অনুসরণ করে, রাস্তাঘাটে আমি কয়েকবার হামলার শিকার হয়েছি।

এই পরিস্থিতিতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমার সন্তানেরা যেহেতু আমার সম্পদের লোভে এমন অবস্থান নিয়েছে আমি এর প্রতিকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলমান রাখব। যেই সন্তানদের আমি শিক্ষা দিক্ষায় বড় করেছি তারপরও যেহেতু আমার বিরুদ্ধে এমন জুলুমের অবস্থান নিয়েছে, আমি তাদের আমার বিশ্ববিদ্যালয়সহ যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি তে কোন প্রকার অংশ প্রদান করব না। বরং আমি এই সম্পদের সম্পুর্ন অংশ জনকল্যান মুলক কজে দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমার আইনজীবী আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। আমি সরকার সহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তি যারা এতিমদের নিয়ে কাজ করেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমার সাথে যোগাযোগের জন্য।

আমার মূল উদ্দেশ্য নিজের অর্জিত সম্পদ যেন পিতৃমাতৃহীন শিশুদের কল্যানে কাজে লাগে এবং আমার সৃষ্টি করা ইউনিভার্সিটিতে যেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও শিক্ষার মর্যাদা রক্ষা থাকে। আমি সাংবাদিকবৃন্দের মাধ্যমে এটি প্রকাশ করছি যেন সংশ্লিষ্ট সকল মহল এই অন্যায় ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত হন এবং আমাকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সাহায্য করেন। এবং আমার মৃত্যুর পর পারিবারিক ষড়যন্ত্র থেকে আমার সম্পদকে রক্ষা করে এতিম শিশুদের জন্য ব্যয়ে সাহায্য করেন।