পূর্ববাংলায় এলেন জিন্নাহ সাহেব
বিরাট জনসভা রেসকোর্স ময়দানে,
চার পাঁচশো ছাত্র নিয়ে মাঠের কোণে
তরুণ নেতা শেখ মুজিব,
“উর্দূই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”
বল্লেন জিন্নাহ তার ভাষণে,
ছাত্ররা হাত তোলে জানিয়ে দিলো “মানিনা”।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশন
বক্তৃতায় আবারো জিন্নাহর উক্তি
“উর্দূই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”
সামনে বসা ছাত্ররা তাঁর সামনেই
প্রতিবাদ করে জানায়, “না, না, না”।
বেশ ক্ষাণিক চুপ রইলেন জিন্নাহ
তারপর আবারো যথারীতি ভাষণ শুরু,
জীবনে হয়তো এই প্রথম, তাঁর মুখের
উপর, কথার প্রতিবাদে বাংলার সাহসী ছাত্ররা।
খাজা নাজিমুদ্দিন একদিন পল্টন ময়দানে সভায়
দিলেন আমলাতন্ত্র ধারণ করা একই বুলি,
“উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা “
ফুঁসে উঠে আপামর ছাত্র জনতা,
শেখ মুজিব গ্রেফতার হয়ে কারাগারে,
ভাষার দাবিতে অনশন হাসপাতালে ভর্তি,
ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন
হয় রাষ্ট্রভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত,
একুশে ফেব্রুয়ারি পূর্ববাংলার আইনসভা
এদিনেই রাষ্ট্রভাষা দিবসের কর্মসূচী,
১৪৪ ধারা জারি, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা
একুশে ফেব্রুয়ারি রাতে, কারা সিপাহীরা
খবর দেয়, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা মিছিলে গুলি,
ঝরে গেছে তাজা ক’টি প্রাণ, রক্তে লাল
ঢাকার রাজপথ, খালি করে মায়ের বুক,
মাতৃভাষা আন্দোলনে পৃথিবীতে
প্রথম রক্ত দিলো অকুতোভয় বাঙালি,
দেশের মানুষ বুঝতে পারলো
পাকশাসক তাদের বন্ধু নয়,
স্বাধীনতা, মুক্তি’র স্বপ্নবীজ বপন
হলো শুরু, তারই ধারাবাহিকতায়
একাত্তরের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ,
ভাষা, দেশ, পতাকা, বিশ্বমানচিত্রে ঠাঁই
সবকিছুর অগ্রনেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি
ফিদেল ক্যাষ্ট্রোর হিমালয়, জুলিওকুরি,
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…
লেখক: সিনিয়র ম্যানেজার গ্রেড-১, (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী), বুয়েট, ঢাকা।