বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কমলাপুরে অবস্থিত আইসিডিতে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহনের অবৈধ পার্কিং রোধে ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের আয়োজনে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উক্ত এলাকার ট্রাফিক শৃঙ্খলা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয় এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হয় ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সমন্বয় সভায় ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম সভাপতিত্ব করেন। এ সভায় আইসিডি সম্পর্কিত বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কমিশনার, কাস্টম হাউস, আইসিডি এর প্রতিনিধি মোঃ ফকরুল আমিন চৌধুরী, যুগ্ম কমিশনার কাস্টম হাউস, আইসিডি, ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (পূর্ব), বাংলাদেশ রেলওয়ে এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী, বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের প্রতিনিধি মোঃ গোলাম মোস্তফা, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ, কাউন্সিলর ৬ ও ৮ নং ওয়ার্ড , ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্রেইলার মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রাক,কাভার্ড ভ্যান, ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপ পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল বিভাগ), অফিসার ইনচার্জ, মুগদা ও শাহজাহানপুর থানা এবং সংশ্লিষ্ট জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, সহকারী পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক মতিঝিল) উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আইসিডিতে গমনাগমনকারী বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, প্রাইমমুভার, ট্রেইলর মূল রাস্তায় অবৈধভাবে পার্কিং করে জনদুর্ভোগ বাড়ানো আদৌ কাম্য নয়। এ সময় উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে উপস্থিত স্টেকহোল্ডারগণ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
জানা যায়, কমলাপুরে অবস্থিত আইসিডিতে (এনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) গমনাগমনকারী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রেইলর, প্রাইম মুভার প্রভৃতি অসংখ্য যানবাহন মূলসড়কে অনাকাঙ্খিত ও আইন বর্হিভূতভাবে পার্কিং করে রাখা হয়। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এমআরটি-৬ লাইনের সম্প্রসারণ, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, টিটিপাড়া আন্ডারপাস প্রভৃতি মেগা প্রজেক্টের কার্যক্রম চলমান থাকায় বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম টার্মিনাল সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, খিলগাঁও ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বিদ্যমান থাকায় বর্ণিত সড়কে অগণিত যানবাহনের চলাচল।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্রেইলর, লরি ইত্যাদি পার্কিং থাকায় নগরবাসী ও এ রাস্তা ব্যবহারকারী যাত্রী সাধারণ চরম অস্বস্তি ও দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন। যানজটের কবলে পড়ে প্রতিদিন জনসাধারণের অপচয় হচ্ছে হাজার হাজার কর্মঘন্টা।
এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সমন্বয় সভায় নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এগুলো হলো- এক. দীর্ঘদিন পড়ে থাকা উক্ত শ্রেণীর অব্যবহৃত গাড়ীসমূহের (আইসিডির বাহিরে ও অভ্যন্তরে) তালিকা করে আগামী ৩ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ অপসারণ করবেন । ডিএমপি’র ট্রাফিক ও ক্রাইম বিভাগ তাদেরকে সহায়তা করবেন। দুই. অপ্রয়োজনীয় তথা সংখ্যার অতিরিক্ত গাড়ী কোনমতেই এখানে আনয়ন করা যাবে না। উক্ত শ্রেণীর পরিবহন নেতৃবৃন্দ তা আগামী ৩ দিনের মধ্যে তালিকা করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিন. আইসিডির অভ্যন্তরে বেশি সংখ্যক গাড়ী রাখতে হবে। চার. অতি দ্রুত উক্ত শ্রেণীর পরিবহন নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ রেলওয়ে কিংবা অন্য যে কোন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ পূর্বক ভিন্ন কোন স্থানে গাড়ী পার্কিং এর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ/লীজ/ভাড়া নিবেন যাতে মূল রাস্তা ফ্রি থাকে এবং পাঁচ. আগামী সপ্তাহ থেকে মূল সড়কে এমনভাবে কোন গাড়ী পার্কিং রাখা যাবে না যাতে অত্র রাস্তায় চলাচলকারী সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের চলাচলের বিঘ্ন/অন্তরায় ঘটে।