এস এম নাদিরুজ্জামান আজমল
ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়ে আছে অষ্টগ্রাম উপজেলা সদর হাসপাতাল ও ইউএনও-র বাসভবনের পাশের খাল। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় খালের দুই পাড়ে ৫ থেকে ৬ ফুট করে ময়লার স্তর জমে আছে। এতে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)র বাসভবন এলাকার পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি একদিকে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম আর অন্যদিকে এসব ময়লা-আবর্জনায় তৈরি হচ্ছে মশা ও ছড়াচ্ছে মারাত্মক দুর্গন্ধ। এ কারণে খালপাড়ের বাসিন্দাদের নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। খালটি রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
উপজেলা সাবরেজিস্টার এর কার্যালয়, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটোরিয়াম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বাসভবন সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একমাত্র প্রবেশপথে এরকম অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পথচারীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খালটি অষ্টগ্রাম উপজেলা সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবনের কোল ঘেঁষে উপজেলা সদরের বড়বাজার ও এর আশপাশের এলাকা হয়ে ইউএনও-র বাসভবন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশ দিয়ে নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ওই খালে পোল্ট্রিফার্ম, চালের মিল, হোটেল, মাছ ও কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে খালটি। ময়লার স্তূপ এমন আকার ধারণ করেছে যে, প্রতিটি স্তুপ দেখে মনে হবে যেন পাহাড়। নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে সবাই উপজেলা সদরের এই খালটির দুই পাশে ময়লা ফেলছেন। অষ্টগ্রাম বড় বাজারের মাছ বাজারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি মুরগির দোকান রয়েছে। এসব দোকানের সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এ খালে। এ কারণে খালটি এখন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দুই পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ভরপুর থাকায় মশার উপদ্রবের পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দুর্গন্ধসহ বিভিন্ন রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে। দুই পাশের ময়লা-আবর্জনার কারণে বোঝার উপায় নেই এটি খাল। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন।
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমীন রনি, অষ্টগ্রাম বড় বাজারের ডেন্টিস্ট তোফাজ্জল হোসেন তপু, অষ্টগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক শেখ তৌফিকুল ইসলাম তারিফ প্রমুখ সহ একাধিক পথচারী বলেন, খালের দুই পাশে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা ফেলেন। খালের উপরের ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় গন্ধে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যায়। এতে মানুষের চলাচলে সমস্যা হয়। এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ না হলে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এ খালটি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে এই ময়লা আবর্জনা সরিয়ে খালটিকে পুনঃজীবিত করার পাশাপাশি উপজেলায় অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোকেও দখলমুক্ত করার অনুরোধ জানান তারা।
অষ্টগ্রাম বড় বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি রাজিব আহমেদ হেলু বলেন, বাজারের ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় সব ময়লা এখানে ফেলা হয়। নির্দিষ্ট ডাষ্টবিন তৈরি করা হবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ বিষয়ে আমি প্রস্তাব রেখেছি বাকীটা সময়ের ব্যাপার। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু জানান, আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জোর দাবী করবো কয়েকটি স্থায়ী ডাস্টবিন নির্মানের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য।