ঢাকা   ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অটোমোবাইল ওয়ার্কশপের জন্য এফবিসিসিআইয়’র ১ কোটি টাকা সহায়তা চাই: ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : সোমবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
  • 16 শেয়ার

হিল্লোল কল্লোল
একজন ব্যবসায়ী নেতা। একজন সংগঠক। নিরবে নিভৃত চলা এ ব্যবসায়ী নেতা এফবিসিসিআই জীবী সদস্যদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য । সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ (workshop) মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি মানুষের যেকোনো সমস্যা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে চান। যে কারণে ত্রিশ হাজার সদস্য হওয়ার পরও তিনি ক্লান্ত হননি। তাদের সাথে কাজ করতে ২০০২ সালে এই সংগঠনটি এফবিসিসিআই কর্তৃক নিবন্ধিত হয়।
অসহায় অশিক্ষিত, প্রতিবন্ধী, কমশিক্ষিত, ব্যক্তিদের ট্রেনিং করিয়ে বিদেশের পাঠানোর ব্যবস্থাও করেছে এই সংগঠনটি। দেশের ব্যাপক সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পেছনে এ সংগঠনটির ভূমিকা রয়েছে। এতে সরকারের ব্যাপক পরিমাণ রাজস্ব আয় হচ্ছে। বিদেশে সাধারণত নরমাল একজন শ্রমিকের বেতন যদি হয় ত্রিশ হাজার টাকা, ট্রেনিং প্রাপ্ত একজন কর্মচারীর বেতন হবে ১ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি বিআরটিএ যে আইনটি করেছে সেটা এই সংগঠনটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, কারণ এ সংগঠনটি অসহায়দের পাশে সহায়ক হিসেবে দাড়িয়েছে।
বিআরটিএ’র এই আচরণকে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন এটা খুবই দুঃখজনক। ওয়ার্কশপ মালিকরা এই আইন কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই কথাগুলো অত্যন্ত সাহসের সাথে দৈনিক বিজনেস ফাইলের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন সংস্কার হোক বা নাই হোক (দেরি হলে প্রয়োজন নেই) অতি দ্রুত নির্বাচন করে ব্যবসায়ীদের হাতে প্রতিনিধিত্ব ফিরিয়ে দেয়া দরকার। তা না হলে মানুষের দুঃখ দুর্দশা শেষ হবে না। মানুষ আর কষ্ট নিতে পারছে না।
আইনশৃঙ্খলাও ঠিকমতো কাজে আসছে না। ভোক্তা অধিকার আইন কার্যকর (ইমপ্লিমেন্ট) করতে হবে। প্রান্তিক কৃষক একেবারে কম টাকা পাচ্ছে। যে পাতা কপি বগুড়ায় আট/ দশ টাকা সেটা ঢাকার বাজারে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কেন?। পরিবহন কস্ট আর মধ্যস্বত্ব ভোগীরাই সব পয়সা খেয়ে ফেলছে। কেনা কত , বেচা কত,মধ্যস্বত্ত ভোগি কত, কিংবা অন্য কেউ থাকলে সেটা কত?
সাধারণ মানুষকে এটা জানতে হবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ, খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একসাথে কাজ করতে হবে।
উল্লিখিত মন্ত্রণালয় গুলোকেই খরচ গুলো ঠিক করে দিতে হবে।
কারণ দ্রব্যমূল্যটা সাধারণ মানুষের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
এটাকে কোনভাবেই হালকা ভাবার সুযোগ নেই। এছাড়াও ঠিকমতো মনিটরিং করাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারকে অবশ্যই এ ব্যাপারে ট্রান্সফারেন্ট হতে হবে। এটা করতে না পারলে তাকে সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এটা করা না গেলে বুঝতে হবে ভেতরে রহস্য আছে?
এটা করতে না পারলে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য সরকারকে পর্যাপ্ত ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে। টিসিবি একমাত্র পথ নয়। তিনি বলেন ছাত্র জনতার রক্তের উপর বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত। তাদের বিবেককে অত্যন্ত উঁচুভাবে তুলে ধরতে হবে। এখনো কারা চাঁদাবাজি করে, কমিশন খায় তা তদন্ত করে দেখতে হবে।
সফরসঙ্গী হিসেবে বা বিভিন্ন সেমিনারে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন এতদিন যাদের পাঠানো হতো এভাবে পাঠিয়ে এফবিসিসিআই কে ভীষণভাবে বিতর্কিত করা হয়েছে। এখন সুযোগ এসেছে সেগুলো শুধরে নেওয়ার। যারা বিজনেস আনতে পারবে, যাদের ক্যাপাসিটি ভালো, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভালো তাদের পাঠাতে হবে। সৎ, যোগ্য, শিক্ষিত, সাহসী ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য দেশ কেন আমাদের গুরুত্ব দেবে?
ব্যাংক বড় ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়, ছোট ব্যবসায়ীদেরকে দেয় না। তারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সৎ মা ভাবে। তাদের ব্যাংকে কোন স্পেস নেই। আমি অবাক হই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসএমই বা ছোট ব্যবসার জন্য সরকারের সবচেয়ে বেশি প্রচেষ্টা থাকে। সর্বপ্রথম ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়।কারণ তারা ঋণ খেলাপি সাধারণত হয় না। বিদেশে এসএমই ব্যবসায়ীদের বিনা সুদে টাকা দেয়া হয়। কারণ তারা দেশকে ভালবাসপ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও তো যেকোনো একজন ব্যবসায়ীর গ্যারান্টি তে ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়া হয়।
ঋণ খেলাপি এত কেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যখন ঋণ দেয়া হয় তখন থেকেই ব্যাংক কর্মকর্তারা বায়াস। কারণ তারাই তো বলেন কাগজপত্র, মটগেজ, নিয়ম নীতি সাপেক্ষেই তারা ঋণ দেন।ঋণ খেলাপি কিস্তি খেলাপি হলে তাদেরই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একজনের প্রাথমিক ঋণ যখন খেলাপি হবে তখনই তাকে আইনের মাধ্যমে নজরদারিতে রাখতে হবে। চোর ডাকাতকে সুযোগ দিলে তারা তো সেই সুযোগটা নেবেই। অবশ্য নানা যুক্তিসঙ্গত কারণেও একজন ব্যবসায়ী ঋণ খেলাপি হতে পারে।এগুলোও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিবেচনায় আনতে হবে।
সমস্যা হচ্ছে নৈতিকতা।
ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। কারণ একজন তদবির করে টাকা পেয়ে যাচ্ছে আরেকজন ভালো ব্যবসায়ী তার বিজনেসের প্রয়োজনে বার বার চেয়েও টাকা পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ মোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক সমিতির প্রস্তাবনা
১) ভ্যাট সুবিধা: সরকার এখান থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে (এটা অসহায়দের সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান) তাই এ সংগঠনের সদস্যরা ভ্যাট সুবিধা পাবার যোগ্য। ২) প্রশিক্ষণ সেন্টার: এ সেক্টরে বড় কোনো প্রশিক্ষণ সেন্টার নেই। বড় প্রশিক্ষণ সেন্টার নির্মাণ করা প্রয়োজন। ৩) জমি বরাদ্দ: ঢাকায় অবস্থিত ওয়ার্কশপ এর জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। এতে যানজট মুক্ত হবে শহর। ৪) শিল্পাঞ্চল জোন তৈরি : অপরিকল্পিতভাবে নগরায়নের কারণে অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
অটোমোবাইল সেক্টরের জন্য একটা শিল্পাঞ্চল জোন তৈরি করা দরকার। ৫) অবকাঠামো অবকাঠামো উন্নয়ন:
সংগঠনের কেন্দ্রীয় অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই চেম্বার/ অ্যাসোসিয়েশন ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্প থেকে এককালীন ১ কোটি টাকা সহায়তা চাই।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০