
বিজনেস ফাইল প্রতিবেদন
৮৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি এক্সিম ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে গত ৬ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ একই মামলার আসামী হয়ে নিয়মিত অফিস করে যাচ্ছেন ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা খাতুন।
এ তথ্যের উপর অনুসন্ধান করতে গেলে বেরিয়ে এসেছে মাহমুদা খাতুনের কালো অধ্যায়।
এই মাহমুদা খাতুন যিনি মিলি হিসেবে বেশি পরিচিত তিনি ছিলেন নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজমুদারের খাস লোক। তার হাত ধরে নামে-বেনামে চার হাজার কোটি টাকারও উপরে লোন নিয়েছে নজরুল ও তার সুবিধাভোগীরা।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, গুলশান কর্পোরেট শাখার ম্যানেজার থাকাকালে এই লোনগুলো তিনি দিয়েছিলেন।
এক্সিম ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মাহমুদা খাতুনের হাত থরে নাসা গ্রুপের দুই এমডি সাইফুল ও রঞ্জন যথাক্রমে ১৩০ ও ১৭০ কোটি টাকা লোন নিয়েছে, বগুড়ার সাবেক এমপি রফিক নিয়েছেন ৪৫০ কোটি টাকা, সাঈদ নামে নজরুলের আরেক সহযোগী নিয়েছেন ২১২ কোটি টাকা, মজুমদারের মেয়ে আনিকা ও তার জামাই মিলে নিয়েছে ৬০০ কোটি টাকার লোন।
তবে সবচেয়ে বড় লোন নেওয়া হয়েছে রাওয়া ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) আফসারের নামে, ২৫০০ কোটি টাকা।
মেজর আফসার দুই বছর আগে হঠাৎ মারা যাওয়ার পর ২৫০০ কোটি টাকার লোন সামনে চলে আসে। মেজর আফসারের বড় ছেলে বলেন, তারা তাদের বাবার এ লোনের কথাই জানেন না।
এটাই প্রমাণ করে এসব লোন আসলে নজরুল ইসলাম মজুমদারের জন্য নেওয়া হয়েছিলো। যার পুরস্কার হিসেবে মজমুদারের ঘনিষ্টজন মাহমুদাকে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি এক্সিম ব্যাংক হেড অফিসে নিয়ে এসে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বসানো হয়। শুধু এই পুরস্কারই নয়, এসব লোন পাস করিয়ে দেওয়ার কারণে মাহমুদাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে গুলশানে একটি ফ্লাট। যার বর্তমান বাজার মূল্য আট কোটি টাকা। এসব কালো অধ্যায় প্রসঙ্গে মাকসুদা খানমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে পরে কথা বলবেন বলে এড়িয়ে যান। পরে আর ফোন রিসিভ করেন নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি নিয়মিত অফিস করছেন।
মাকসুদা খানম ১৯৯৫ সালে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে এক্সিম ব্যাংকে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। এক্সিম ব্যাংকে কর্মদক্ষতার চেয়েও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের আনুকুল্যের ফলস্বরুপ অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি পদোন্নতি পেয়ে গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা দক্ষিণ অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।
আপনার মতামত লিখুন :