বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র গাড়ি সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর নিকট প্রাপ্ত বকেয়া বাবদ পাওনা তুলে ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এস. আর ট্রাক্টরসের প্রোপাইটার সামসুল হুদা সংবাদ সম্মেলন করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ এর শুরু থেকেই তিনি অন্যতম এজেন্ট ও ডিলার হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নানা কারণে প্রতিষ্ঠানটি মুখ থুবড়ে পড়ে এবং বন্ধের উপক্রম হয়। সে সময় আমি বিআরটিসি এবং সরকারের অন্যান্য দপ্তরকে তখন বোঝাতে সক্ষম হই, বিদেশ থেকে সরাসরি গাড়ি আনলে দেশের মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হয়, আর প্রগতির মাধ্যমে গাড়ি নিলে একই মানের গাড়ি অনেক কমমূল্যে এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সে থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ও সরবরাহ বেড়ে গিয়ে তা লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিআরটিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি এস আর ট্রাক্টরস থেকে সে সময় জোরপূর্বক চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। টাস্কফোর্স তদন্ত করে সে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তৈমূর আলম খন্দকারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা হয় এবং মামলায় তার সাজা হয়। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৮-২০০৬ পর্যন্ত বিআরটিসিতে মিনি বাস, বাস ও ট্রাক মিলিয়ে সর্বমোট ৫৪৭ টি গাড়ী বিক্রয় করে প্রগতি। বিক্রয়কালীন সময়ে উল্লেখিত গাড়িসমূহের কার্যাদেশ প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর পক্ষে সংগ্রহ করা, ডেলিভারি/রিসিভ করা এবং সার্ভিস ওয়ারেন্টির জন্য নির্দিষ্ট হারে কমিশন নির্ধারিত হয়। সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করলেও তার প্রাপ্ত কমিশন আজও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সব মিলে প্রগতির কাছে এস আর ট্রাক্টরের পাওনা রয়েছে ৭ কোটি ৩৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৮৮ টাকা। এছাড়া ৯ পিস হাইড্রোলিক বীম লিফটার সরবরাহ কাজে এস আর ট্রাক্টরের প্যাড ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অংশ নেয়া হয়। প্রতিটি ৫২ লাখ ২৫হাজার ধরা হলেও প্রকৃত পক্ষে লাভসহ ৩৫ লক্ষ দিলেই যথেষ্ট ছিল। এক্ষেত্রে তিনি ১৫% লাভে ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হন। তিনি বলেন, বকেয়া টাকা বুঝে না পেয়ে বৃদ্ধ বয়সে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে লিখিতভাবে জানানো, উকিল নোটিশ পাঠানো এবং পত্রিকায় মানবিক আবেদন প্রকাশ করার পরেও তার পাওনা পরিশোধের বিষয়ে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোন সাড়া দেননি। মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে, দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বন্ধ হতে যাওয়া প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে সতেজ করলেও সে প্রতিষ্ঠানই তার বকেয়া পাওনা থেকে বঞ্চিত করে নিদারুন আর্থিক কষ্টে ফেলেছেন। তিনি দায়িত্বশীল প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সুবিচার কামনা করেন।