
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৌদি আরবে নিহত বাংলাদেশি প্রবাসী নদী আক্তারের ডিএনএ টেস্ট ও ময়নাতদন্তের সুষ্ঠু প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিতে সমাবেশ হয়েছে। ওই নারীর মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র। এ সময় নিহত নদী আক্তারের মা বিউটি বেগমও উপস্থিত ছিলেন।
নদী আক্তারের মা বিউটি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে আগস্টের ১৪ তারিখ মারা যায়। কিন্তু আমি জানতে পারি প্রায় ১০ দিন পরে। যখন মেয়ের খোঁজ না পেয়ে নানাভাবে ওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম তখন তারা জানায় আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমরা জানি নদী আত্মহত্যা করেনি। তাকে খুন করা হয়েছে।’
নদীকে ১৮ মাসে ৩টি বাসায় কাজে দেয়া হয় উল্লেখ করে তার মা বলেন, ‘প্রতিটি বাসায় তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হতো। রিক্রুটিং এজেন্সি ঢাকা এক্সপোর্টসের মালিক লালনকে বারবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ধমক দিয়েছে।’
গত ২৫ জানুয়ারি নদীর লাশ কবর থেকে তুলে ২৬ জানুয়ারি তদন্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে কী নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে আমরা তা জানি না। সুষ্ঠু ডিএনএ টেস্ট ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অতিদ্রুত সবার সামনে প্রকাশ করা হোক।’
সমাবেশে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ‘সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে নারীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এর দায় ভিকটিমদের ওপর দিয়ে নিজেরা দায়মুক্ত থাকতে চায়। প্রবাসে দূতাবাসগুলোতে সহযোগিতা চাইতে গেলে সেখানেও নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার সংবাদ আমরা শুনতে পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নদী আক্তারের ডিএনএ টেস্ট-ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ ও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া নারী শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানো যাবে না।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠনটির দফতর সম্পাদক তৌফিক লিজা, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও নিহত নদীর বাবা দুলাল শেখ প্রমুখ বক্তব্য দেন।