ঢাকা   ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্রুত সংস্কার করে দ্রুত এফবিসিসিআই’র নির্বাচন দিন: শফিকুল ইসলাম ভরসা

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
  • 30 শেয়ার

বিজনেস ফাইল ডেস্ক
নিরবে নিভৃতে চলা একজন ব্যবসায়ী নেতার নাম মোঃ শফিকুল ইসলাম ভরসা। বন্ধুবান্ধব ও কর্মীদের সাথে খুবই ইতিবাচক মানুষ তিনি। ব্যবসায়ী মহলে একজন স্মার্ট ও মিশুক মানুষ হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বারবার নির্বাচিত এফবিসিসিআই পরিচালক তিনি। দায়িত্ব পালনকারীর সময় নিজের সর্বোচ্চ মেধা শ্রম আর সাংগঠনিক ক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করেছেন এফ বিসিসিআইকে এগিয়ে নিতে। এসোসিয়েশন সদস্যদের পাশে যেমন তিনি থেকেছেন তেমনি চেম্বার্স নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায়ও একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে থেকেছেন। সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা থাকায় ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহ্যবাহী বারভিডার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল দৈনিক বিজনেস ফাইলকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন এফবিসিসিআই তে সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন। যেটা করার এখনই সময়। এটা বিগত ওয়ান ইলেভেনে একবার কাজ শুরু হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে তা হয়নি। এবার এটা ভালোভাবে হোক এই কামনা করছি। বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়
এফবিসিসিআই ও তার সচিবালয়কে অনেক বেশি বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী, আমাদের হাই-ভলিয়ূমের অর্থনীতি সবকিছুই মিলে দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট খ্যাত এফবিসিসিআই কে দ্বিতীয় ন্যায়ের ফল্গুধারায় বিকশিত হতে হবে। দ্রবমূলের যে নাভিশ্বাস জনগণের মাঝে নেতৃত্ব না থাকায় সরকার আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আসলে সংস্কার টা এবার না হলে আগামীতেও হবে বলে মনে হয় না। ব্যবসায়িক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত আমিও। তবুও বলবো সংস্কারটা করেই নির্বাচন দিলে দেশের জন্য, ব্যবসায়ীদের ভালো হবে। অটো পরিচালকদের ব্যাপারে তিনি বলেন সেক্টর ওয়াইজ পরিচালক দরকার আছে। আবার এর উল্টো দিকও আছে। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের নেতারা এখানে পরিচালক হিসেবে বিজয় হতে পারেন না। তবে অটো প্রথা কমিয়ে আনা ষায়। চাকরি ২০+৫+২০+৫ সবমিলিয়ে ৫০ হলে চলে। তবে কারো কারো মতে অ্যাসোসিয়েশনে কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন আওয়ামী লীগে এখনো প্রচুর ভালো মানুষ রয়েছে। যারা কমিটেড এবং দুর্নীতি মুক্ত। তারা দেশের জন্য অবদান রাখতে পারেন।যারা অন্যায় করেছে তাদের যেমন বিচারের আওতায় আনা উচিত।আবার যারা অন্যায় করেনি তাদের প্রতি জুলুম করা উচিত নয়। আওয়ামী লীগ দল হিসেবে তো অন্যায় করেনি, করেছে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ। তবে দায়িত্বশীলরা অবশ্যই নাষ্যতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে তাদের কর্তব্য পালন করবেন।টিভিতে দেখলাম এড জেড আই খান পান্না বলেছেন আমি শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করব। সমস্যা কি। এখন তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো কতটা যৌতিক এটা জনগণকে ভাবতে হবে। সবশেষে ব্যবসায়ী সমাজ ও এফবিসিসিআই সদস্যদের জন্য শুভকামনা থাকলো।
দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে ছাত্র জনতার আন্দোলনে। ‘২৪ এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মানুষ জেগেছে । আগে যেটা বলা যেত না এখন সেটা বলা যাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মূহাম্মদ ইউনূস বিশ্বে অত্যন্ত একজন সজ্জন ও সম্মানিত ব্যক্তি। কানাডায় ক্লাস সেভেনের বইতে তার জীবনী পড়ানো হয়। দেশের জাতীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিটি কাজ করছে।
এফবিসিসিআই দেশের ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ পার্লামেন্ট। এখানে বিগত দিনে বেসিক ডেমোক্রেসি চলেছে। বেসিক ডেমোক্রেসি (ফাতেমার জিন্নার আমলে ছিল) বলতে নির্বাচনে কিছু পদে নির্বাচিত হন। পরে মূল পদের মানুষ ঠিক করে ঐ নির্বাচিতরা। এতদিন আমাদের এভাবেই চলছিল। এ মুহূর্তে যারা সংস্কার আন্দোলন করছেন তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা রয়েছে।এফবিসিসিআইতে নতুন সংগঠন অন্তর্ভুক্তিতে ৫০ লাখ টাকা নেওয়া হয় এটা কি মগের মুলক? এটা হতে পারে ৫/১০ লাখ টাকা। গতিশীল অর্থনীতিতে এটা বড় বাধা। সংগঠন যাতে না বাড়ে এটার একটা প্রচেষ্টা। যারা এ ধরনের কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেন যারা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে চান এমন ব্যক্তিদের তারা আটকে রাখতে চান? প্রতিটা সংগঠনকেই তো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে টিও লাইসেন্স দেয়। আর জিবি মেম্বারদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে। সকল পদে সরাসরি নির্বাচন না হলে সদস্যদের গুরুত্ব থাকবে না।
:সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ও জার্মান রাষ্ট্রদূত মোশারফ হোসেন ভূইয়া যখন ডিটিও ছিলেন সে সময় তিনি একটি আদেশ জারি করেছিলেন। স্মারক এমসিওবা বা ৬ সিএ৪/২০০২-৪২১/৪২২ ৩১/৭/২০০২। জাস্ট এ অর্ডারটা ফলো করলেই হয়। এফবিসিসিআইকে নিয়ে কোনভাবেই কাউকে রাজনীতি করতে দেয়া উচিত নয়। এফবিসিসিআই থাকবে সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত। তাহলে সবার মঙ্গল হবে। কখনো কখনো দেখা যায় সভাপতির সামনে, সহ-সভাপতিদের সামনে জিবি সদস্যরা ঘুরছে কেউ কাউকে চিনছে না এটা কি একটা উদ্ভট টাইপের ব্যাপার হয়ে গেছে এখানে? বিগত দিনে যে ক্ষতি হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের আর যেন এমনটা না হয় এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
ধরুন আমাদের তিনটা সমিতি আছে। এই সমিতি থেকে প্রতিনিধি হবার দরকার। তখন প্রতিনিধিত্ব করবেটা কে? তখন কেউ কাউকে মানবে না? এটা নিয়ে রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে। এ সময় একজন আরেকজনকে আস্থায় নিতে পারে না। তিনি বলেন এফবিসিসিআই ব্যাপক বিষয়। এর অনেক কাজ। বিগত সময় দেখেছি শুধু বাজেটের দিনে বলা হয় একটা সুন্দর বাজেট। এগুলো একটা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার সমস্যাটা আমি বলতে পারব না কেন /আর বাজেটে কি থাকবে এসব বিষয়ে আমাদের কথা কার্যকর দেখিনি। অর্থমন্ত্রী বাজেটে তা সন্নিবেশিত করেন না। এ ব্যাপারে কাউকে কখনো বলতে কিছু বলতে শুনিনি? এফবিসিসিআই তো চামচামির জায়গা না, সরকারের সাথে সমন্বয় করে চলার জায়গা। সরকার ভুল করলে তাকে শুধরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এক বছরে কমপক্ষে তিনটি সভা প্রয়োজন। সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বছরের কর্মসূচি হওয়া উচিত। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান বানানো উচিত। এফবিসিসিআই অফিস কর্মকর্তা চেয়ারে বিভিন্ন সেক্টর সম্বন্ধে জানা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০