বিজনেস ফাইল প্রতিবেদক
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি টিনশেড বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৩২ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গাজীপুরের দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে ৩২ জন রোগী এসেছেন। তার মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি বার্ন ১৬ জন। আর ৯০ শতাংশ বার্ন ১০ জনের বেশি। শিশুও আছে। রোগীগুলোর এতো বাজে অবস্থা যে সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকিটা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে রোগীদের কেউ আশঙ্কামুক্ত না। ৬ জন ইতোমধ্যে আইসিইউতে আছেন।’
দগ্ধ শিশুদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের ১০ শতাংশের বেশি বার্ন হলেই মেজর হয়ে যায়। সেখানে ৩০ শতাংশের বেশি বার্ন আছে। শিশু ১০ বছরের মধ্যে ৭ জন আর ১১ বছর থেকে ১৮ বছরের আছে ৬ জন। মোট ১৩ জন শিশু।’
এর আগে মন্ত্রী সকাল ৮টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি বোর্ডসভায় বসেন।
ভর্তিকৃত রোগীদের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য অবহিত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ভর্তিকৃতদের মধ্যে কতজন শিশু, কতজনের অবস্থা বেশি গুরুতর, কতজন আইসিইউ, এইসডিওতে ভর্তি আছেন তার খোঁজ নেন মন্ত্রী।
সভায় অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগীদের শারীরিক কষ্ট অনেক। প্রতিটি রোগীকে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো মনে করতে হবে। দগ্ধ রোগীদের অনেকেরই অবস্থা অত্যন্ত আশংকাজনক। আমরা কিছু রোগীকে হয়তো বাঁচাতে পারব না। কিন্তু কোনো রোগীর প্রতি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের চেষ্টার যেন কোনোনরকম অবহেলা না থাকে এটি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।’
দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এই চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় তিনি নিজে বহন করবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবগত করেছেন বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৩২ জন বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। এই ৩২ জনের মধ্যে ৫ জন রোগী আইসিইউ এবং ২ জন এইচডিইউতে ভর্তি রয়েছে। রোগীদের মধ্যে ১০০ ভাগ দগ্ধ রোগী আছেন একজন, ৯৫ ভাগ দগ্ধ রোগী আছে ৩ জন এবং ৫০-১০০ ভাগ দগ্ধ ১৬ জন বলে জানানো হয়।