ঢাকা   ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এফবিসিসিআই চামচামির জায়গা নয়: ওসমান গনি

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : সোমবার, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
  • 40 শেয়ার
ওসমান গনি, সত্বাধিকারী-আগামী প্রকাশনী এবং প্রতিনিধি এসোসিয়েশন অব ওয়েব প্রিন্টার্স অব বাংলাদেশ

হিল্লোল কল্লোল
প্রায় আড়াই যুগ ধরে এফবিসিসিআই জিবি সদস্য পদের এদিকে অধিষ্ঠিত রেখেছেন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, বাংলাদেশের শীর্ষ সৃজনশীল প্রকাশকদের অন্যতম তিনি। রাষ্ট্রীয় পর্যায় ছাড়াও দেশের উঁচু মাপের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের অসংখ্য বই প্রকাশ করেছেন তিনি। নাম তার ওসমান গনি।
দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত পছন্দের ব্যক্তি তিনি। তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েব প্রিন্টার্স অব বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন নেতা। এফবিসিসিআই সংস্কার সহ সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে বিজনেস ফাইলকে বলেছেন নানা কথা। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সেগুলোর চুম্বক অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলো :
প্রশ্ন :এফবিসিসিআই সংস্কার বিষয় জিবি সদস্যরা আন্দোলন করছেন? আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
ওসমান গনি :দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে ছাত্র জনতার আন্দোলনে। ‘২৪ এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মানুষ জেগেছে । আগে যেটা বলা যেত না এখন সেটা বলা যাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মূহাম্মদ ইউনূস বিশ্বে অত্যন্ত একজন সজ্জন ও সম্মানিত ব্যক্তি। কানাডায় ক্লাস সেভেনের বইতে তার জীবনী পড়ানো হয়। দেশের জাতীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিটি কাজ করছে।
এফবিসিসিআই দেশের ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ পার্লামেন্ট। এখানে বিগত দিনে বেসিক ডেমোক্রেসি চলেছে। বেসিক ডেমোক্রেসি (ফাতেমার জিন্নার আমলে ছিল) বলতে নির্বাচনে কিছু পদে নির্বাচিত হন। পরে মূল পদের মানুষ ঠিক করে ঐ নির্বাচিতরা। এতদিন আমাদের এভাবেই চলছিল। এ মুহূর্তে যারা সংস্কার আন্দোলন করছেন তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা রয়েছে। এফ বিসিসিআই প্রসঙ্গে আমার মতামত হচ্ছে একই ব্যক্তি দু’বারের বেশি পরিচালক হতে পারবেন না নতুনদের শুরু করে দিতে হবে কি কারনে অটোপ্রথা কালু আমি জানিনা আমি মনে করি এটা কোন প্রয়োজন নেই যেখানে সরকারের ৫0 টা মন্ত্রণালয় অথচ আমাদের পরিচালনা বোর্ডে রয়েছে ৮০ জন পরিচালক, এটা হাস্যকর। এফবিসিসিআই কারো হাতের ক্রিয়ানক হতে পারে না। ভাইস প্রেসিডেন্ট সাতজন এটাও হাস্যকর। ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনেই যথেষ্ট। সব মিলিয়ে ৩১ জন পরিচালকই যথেষ্ট। এফবিসিসিআইতে নতুন সংগঠন অন্তর্ভুক্তিতে ৫০ লাখ টাকা নেওয়া হয় এটা কি মগের মুলক? এটা হতে পারে ২/১ লাখ টাকা। গতিশীল অর্থনীতিতে এটা বড় বাধা। সংগঠন যাতে না বাড়ে এটার একটা প্রচেষ্টা। যারা এ ধরনের কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেন তারা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে চান এমন ব্যক্তিদের আটকে রাখতে চান? প্রতিটা সংগঠনকেই তো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে টিও লাইসেন্স দেয়। আর জিবি মেম্বারদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে। সকল পদে সরাসরি নির্বাচন না হলে সদস্যদের গুরুত্ব থাকবে না।
বিজনেস ফাইল :আরেকটু বুঝিয়ে বলবেন কি?
ওসমান গনি : সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ও জার্মান রাষ্ট্রদূত মোশারফ হোসেন ভূইয়া যখন ডিটিও ছিলেন সে সময় তিনি একটি আদেশ জারি করেছিলেন। স্মারক এমসিওবা বা ৬ সিএ৪/২০০২-৪২১/৪২২ ৩১/৭/২০০২। জাস্ট এ অর্ডারটা ফলে করলেই হয়। এফবিসিসিআইকে নিয়ে কোনভাবেই কাউকে রাজনীতি করতে দেয়া উচিত নয়। এফবিসিসিআই থাকবে সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত। তাহলে সবার মঙ্গল হবে। কখনো কখনো দেখা যায় সভাপতির সামনে সহ-সভাপতিদের সামনে জিবি সদস্যরা ঘুরছে কেউ কাউকে চিনছে না এটা কি একটা উদ্ভট টাইপের ব্যাপার হয়ে গেছে এখানে? বিগত দিনে যে ক্ষতি হয়েছে এফবিসিসিআইয়ের আর যেন না হয় এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
প্রশ্ন: সেক্টর ওয়াইজ সংগঠন হলে সুবিধা কি?
ওসমান গনি :যারা বিশৃঙ্খলা করতে চায় তাদের জন্য এটা। ধরুন আমাদের তিনটা সমিতি আছে। এই সমিতি থেকে প্রতিনিধি হবার দরকার। তখন প্রতিনিধি করবেটা কে? তখন কেউ কাউকে মানবে না? এটা নিয়ে রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে। এ সময় একজন আরেকজনকে আস্থায় নেওয়াটা খুব কঠিন । সুতরাং সেক্টর ওয়াইজ সংগঠন এ মুহূর্তে প্রয়োজন নেই।
প্রশ্ন :গঠনমূলক এফবিসিসিআই নির্মাণে আপনার মতামত কি?
ওসমান গনি :এফবিসিসিআই ব্যাপক বিষয়। এর অনেক কাজ। বিগত সময় দেখেছি শুধু বাজেটের দিনে বলা হয় একটা সুন্দর বাজেট। এগুলো একটা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার সমস্যাটা আমি বলতে পারব না কেন /আর বাজেটে কি থাকবে এসব বিষয়ে কথা কার্যকর দেখিনি। অর্থমন্ত্রী বাজেটে তা সন্নিবেশিত করেন না। এ ব্যাপারে কাউকে কখনো বলতে কিছু বলতে শুনিনি? এফবিসিসিআই তো চামচামির জায়গা না, সরকারের সাথে সমন্বয় করে চলার জায়গা। সরকার ভুল করলে তাকে শুধরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এক বছরে কমপক্ষে তিনটি সভা প্রয়োজন। সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বছরের কর্মসূচি হওয়া উচিত। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান বানানো উচিত। এফবিসিসিআই অফিস চেয়ারে বিভিন্ন সেক্টর সম্বন্ধে জানা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এগ্রিকালচার মেশিনারি সেক্টরে অভিজ্ঞ গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে দেখেছি সংশ্লিষ্ট স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ৭১ নাম্বারে রাখা হয়েছে। এসব খবরদারি যারা করেছে তাদের আর আগামীতে এফবিসিসিআইতে দেখতে চাই না।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০