ঢাকা   ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা নির্বাচনে প্রার্থী হব এই ভাবনা থেকে সংস্কার চাইছি না: জাকির হোসেন নয়ন

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
  • 20 শেয়ার
মো. জাকির হোসেন নয়ন, আহবায়ক-বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) ও সভাপতি-সিএনজি মেশিনারিজ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন ।

হিল্লোল কল্লোল

নিরবে নিভৃতে চলে একজন ব্যবসায়ী নেতা তিনি। দেশ-বিদেশে নানা অভিজ্ঞতায় ঋদ্য। একজন অমায়িক ও বন্ধু বৎসল মানুষ তিনি। বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই সংস্কার নিয়ে কাজ করে চলেছেন। হয়েছেন প্রশাসকের সহায়ক সদস্য। তিনি দীর্ঘ দুযুগের অধিক সময় ধরে ট্রেড পলিটিক্সে রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ সিএনজি মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। একই সাথে বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল এফবিসিসিআই ভবনে দৈনিক বিজনেস ফাইল কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশের চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা, এফবিসিসিআই’র সংস্কার সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সেখানকার নির্বাচিত কিছু চুম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন হাই ভলিউমের। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে যখন দেখি এফবিসিসিআই’র দুরাবস্থা, ব্যাংকে টাকা নেই এনবিআর তামাশা করছে তখন খুব কষ্ট হয়। বিবেক বিবেচনা বোধ থেকে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বলব সংস্কার এখন বড় একটা ইস্যু। এ লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই)ক্রমাগত একনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি ইউএনডিপি থেকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি এসেছিলেন। অথচ তার সাথে ইংরেজিতে কথা বলার মত একজন লোক ও পাওয়া যায়নি।
এফবিসিসিআই গুলশান অফিসে তার সাথে আমার মতবিনিময় কালে তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে অনেক কিছু বলেন। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পৌছলে আমাদের উপকার হবে এ বিষয়ে কথা বলতে যে তিনি বলেন বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে দেশে পুরোপুরি উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করলে কিছু কিছু সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হব। যেমন ধরেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমরা জিএসপি সুবিধা পাচ্ছিনা। অন্য অনেক দেশ থেকে এ সুবিধা পাচ্ছি। এলডিসি (লিজ ডেভেলপিং কান্টি) হওয়ায় আমরা অনেক দেশের সুবিধা পাচ্ছি।আমাদের উৎপাদিত পণ্য যেমন গার্মেন্টস আইটেম অনেক দেশে ১৫% আবার কোথাও ঢুকতে ৩০% ডিইউটি দিতে হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করলে আমাদের সুযোগ গুলো হাতছাড়া হয়ে যাবে। অর্থনীতির বিবেচনায় এখনই উন্নয়ন দেশে প্রবেশ করলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হব। এক্ষেত্রে দুই /এক বছর সময় বাড়িয়ে নিলেই ভালো বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।বিদ্যুতে কুইকরেন্টাল হয়েছে, আইপিপি হয়েছে কিন্তু মানুষকে অন্ধকারে রাখা যাবে না। মানুষকে কে সামনে রেখে অনেক আইপিপি হয়েছে, অপচয় হয়েছে লং রানে সেগুলো টিকবে না। এখন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী টেকসই যাতে হয় সেই বিবেচনা মাথায় রেখে আমাদের চলতে হবে। এফবিসিসিআই নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী নেতা জাকির হোসেন নয়ন বলেন ভারতে ঠিকই তো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগঠন ফিকি আছে। সেখানে পরিচালনা পর্ষদ পঞ্চাশের নিচে। অথচ এফবিসিসিসিআই তে ৮০ জন। একজন সভাপতির সাথে সাতজন সহ-সভাপতি (সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ)। আল্লাহ তো আমাকে বিশ্বের অনেক দেশেই নিয়েছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এ রকম একটা অবস্থা হয়েছে আমার জানা নেই। দেশের মানুষ দ্রব্যমূলের জন্য ভয়াবহ কষ্টে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন বিগত টামে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা এলোমেলোভাবে
এফবিসিসিআইকে কে পরিচালনা করেছেন। যে কারণে জিবি সদস্যরা উপকৃত হয়নি। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কিছু সমস্যা ছিল সেটাও জিবি সদস্যরা জানেন। যা হোক বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) জিবি সদস্যের জন্য একটা ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে। ব্যবসায়ীরা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে। আমাদের দেশের অনেক কিছুই ডাইভারসিফিকেশন করতে হবে। নতুন টেকনোলজি ট্রান্সফার করে উন্নত দেশের অনেক ব্যবসা করে আমাদের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হতে পারেন।
গার্মেন্টস খাত কিংবা অন্য ভালো একটা খাত এমনও তো হতে পারে ওই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আসছে না কিম্বা সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন ব্যবসা থেকে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আসতে পারে সেটা তো গবেষণা করে
এফবিসিসিআই দপ্তরকে বের করতে হবে। এ দপ্তরে সে ধরনের ট্যালেন্ট লোকই এখন নেই। কুইচা মাছ রপ্তানি করে আমাদের ব্যবসায়ীরা হাজার কোটি টাকা আয় করে। এটা একটা সাধারণ উদাহরণ। এফবিসিসিআই সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা রয়েছে আমাদের। আমি বা আমরা নির্বাচন করব, প্রার্থী হবো এটা কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য নয়? উদ্দেশ্য ভালো কিছু করা। পত্রপত্রিকায় সাবেক সরকারের যে সমস্ত তথ্য আমরা পাচ্ছি তা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমাদের ব্যবসায়ী দের মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে। এই ঐক্যই আমাদেরকে পৌঁছে দেবে একবিংশ শতাব্দীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার শক্তি। এই শক্তি হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি এফবিসিসিআই গঠন।
তবে সংস্কার বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে ইনশাল্লাহ।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০